পাতা:নূতনের সন্ধান - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

যুব-আন্দোলন

বিদেশী ভাবাপন্ন হইয়া পড়িবে সে আশঙ্কা আমি করি না কিন্তু যে ism বা মতবাদ আমরা গ্রহণ করি না কেন, ইতিহাসের ধারা ও বর্ত্তমানের প্রয়োজন উপেক্ষা করিলে আমাদের সৃষ্টি কার্য্য কখনও সার্থক বা সাফল্যমণ্ডিত হইতে পারিবে না।

 আজ ভারতের এই হীন অবস্থা কেন? আছে তো সবই— প্রকৃতি, সৌন্দর্য্য, শারীরিক বল, শিক্ষা, দীক্ষা, শৌর্য্য, বীর্য্য, বিদ্যা, বুদ্ধি এর কোনটীর তো অভাব নাই; এ সব উপাদান লইয়া আমরা এক নিখুঁত মূর্ত্তি রচনা করিতে পারি কিন্তু প্রাণ প্রতিষ্ঠার আয়োজন কোথায়? প্রাণ প্রতিষ্ঠা হইবে সেই দিন—যেদিন সমগ্র জাতির মধ্যে মুক্তিলাভের প্রবল আকাঙ্খা জাগরিত হইবে। কোথায় সে পুরোহিত যে মৃতসঞ্জীবনী সুধা আহরণ করিয়া মুমূর্ষু জাতীর দেহপিঞ্জরের মধ্যে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করিতে পারে? যে ব্যক্তি মুক্তির আস্বাদ পাইয়াছে, মুক্ত হইবার জন্য এবং জাতিকে মুক্ত করিবার জন্য যে ব্যক্তি পাগল হইয়াছে, সেই ব্যক্তি অপরকে পাগল করিতে পারে এবং সেই ব্যক্তিই জাতীয় যজ্ঞের পুরোহিত হইবার যোগ্য। আমাদের এই যুব-আন্দোলন এইরূপ শতসহস্র পুরোহিত সৃষ্টি করুক!

 আমাদের আছে সবই, নাই শুধু এক বস্তু—নিঃশেষে আত্মবলিদান—সকল বাধা বিঘ্ন অতিক্রম করিয়া, যাবতীয় বিপদ তুচ্ছ জ্ঞান করিয়া একট আদর্শের পশ্চাতে সারাটী জীবন অনুধাবনের ক্ষমতা।

৮৭