গুরুর এই দুইটি সদ্গুণ—কোমল ও কঠোরের অপূর্ব্ব সংমিশ্রণ-শিষ্য সুভাষচন্দ্রে সম্পূর্ণরূপে প্রতিফলিত হইয়াছিল। মহাকবি ভবভূতির ভাষায় বলা যায়, তিনি ছিলেন-
“বজ্রদপি কঠোরাণি মৃদুনি কুসুমাদপি।
লােকোত্তরাণাং চেতাংসি কোহি বিজ্ঞাতুমীশ্বরঃ॥”
১৯১৩ খৃষ্টাব্দে সুভাষচন্দ্র কটক র্যাভেন্শা কলেজিয়েট স্কুল হইতে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষা প্রদান করেন। এই পরীক্ষায় তিনি কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করিয়া বৃত্তি লাভ করেন। এইবার মহানদীর তীর হইতে বাসভূমি জাহ্নবীর তীরে পরিবর্ত্তিত হইল—কটক ত্যাগ করিয়া তিনি বিদ্যাশিক্ষার্থ কলিকাতা আগমন করিলেন এবং প্রেসিডেন্সী কলেজে ভর্ত্তি হইলেন।
প্রেসিডেন্সী কলেজে আই. এ. পড়িবার সময় স্বামী বিবেকানন্দের ন্যায় তিনিও তাঁহার বুকের মাঝে কি এক নিদারুণ অশান্তি ও অতৃপ্তি অনুভব করিতে লাগিলেন! কণ্টক-শষ্যায় যাঁহার ভবিষ্যৎ বিশ্রাম, তিনি কি কখনও ধনীর দুলালের ন্যায় তৃপ্তি লাভ করিতে পারেন? শীঘ্রই তাঁহার মনোজগতে এক ধর্ম্মভাবের প্রাবল্য উপস্থিত হইল। বাহ্যজগতে পার্থিব বিষয়ে উন্নতি অপেক্ষা আত্মার মুক্তি উজ্জ্বলতর হইয়া ফুটিয়া উঠিল। গৃহে বাস তাঁহার নিকট বন্ধনরূপে দেখা দিল।
যে রহস্য মীমাংসার জন্য বুদ্ধদেব একদিন রাজ্যৈশ্বর্য্য ত্যাগ করিয়া ভিক্ষু সাজিয়াছিলেন, যে ভূমানন্দের প্রত্যাশায়