পাতা:নেপালে বঙ্গনারী - হেমলতা দেবী.pdf/১২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯৬
নেপালে বঙ্গনারী

সৈন্য লইয়া ইংরাজদিগের সহায়তা করিবার জন্য গবর্ণর জেনারেলকে প্রস্তাব করিয়া পত্র লিখিয়াছিলেন, কিন্তু ইংরাজগণ জঙ্গ বাহাদুরের সৈন্যদলের সহায়তা গ্রহণ করেন নাই। ১৮৪৯ খৃষ্টাব্দে শিখ্‌দিগের মহারাণী চান্দা কঁয়াড় চুণার দুর্গ হইতে পলায়ন করিয়া নেপালে আশ্রয় গ্রহণ করিয়াছিলেন। নেপাল সরকার তাঁহাকে আশ্রয় দান করিয়াছিলেন এবং মাসে ৮০০ টাকা ব্যয় নির্ব্বাহের জন্য দিয়াছিলেন, কিন্তু তাঁহাকে নেপালে এক প্রকার বন্দীর ন্যায় রাখা হইয়াছিল। ১৮৫০ খৃষ্টাব্দে জঙ্গ বাহাদুর তাঁহার ভ্রাতৃদ্বয় সমভিব্যাহারে ইংলণ্ড যাত্রা করিলেন। তাঁহার অসুপস্থিতে তাঁহার দ্বিতীয় ভ্রাতা বনবাহাদুর প্রধান মন্ত্রীর কার্য্য করিয়াছিলেন। জঙ্গ বাহাদুর ইংলণ্ড হইতে প্রত্যাবর্ত্তন করিলে, তিনি জাতিচ্যুত হইয়াছেন এই বলিয়া তাঁহাকে হত্যা করিবার জন্য এক চক্রান্ত হয়, তাঁহাকে জঙ্গ বাহাদুরের কনিষ্ঠ ভ্রাতা বদ্রিনুর সিং, তাঁহার পিতৃব্যপুত্র জয় বাহাদুর, রাজাধিরাজের কনিষ্ঠ ভ্রাতা উপেন্দ্র বিক্রম সাহ যোগ দিয়াছিলেন। কাজি করবার ক্ষত্রি জঙ্গ বাহাদুরের সঙ্গে ইংলণ্ড গিয়াছিলেন, তিনি জঙ্গ বাহাদুরের জাতিচ্যুত হইবার কথা উত্থাপন করিয়াছিলেন। বনবাহাদুর এ চক্রান্তের বিষয় অবগত হইয়া জঙ্গ বাহাদুরকে অশ্রুপূর্ণলোচনে এসকল জ্ঞাত করেন। প্রথমে চক্রান্তকারীদিগকে হত্যা করিবার কথা হয়। পরে তাহাদের চক্ষু নষ্ট করিবার প্রস্তাব হয়। শেষে জঙ্গবাহাদুরের অনুরোধে ব্রিটীশ্ গবর্ণমেণ্ট তাঁহাদিগকে এলাহাবাদে বন্দী স্বরূপ রাখিয়াছিলেন।