পাতা:নেপালে বঙ্গনারী - হেমলতা দেবী.pdf/২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নেপালে বঙ্গনারী।

মশাল, লণ্ঠন কিম্বা অন্য কোন আলো নাই। ঝিল্লীনিনাদিত গভীর অরণ্যে নিঃশব্দে ব্যাকুল চিত্তে কয়টী প্রাণী যাইতেছি। আমাদের মন ত্রাসে উৎকণ্ঠিত। শিশুসন্তানগণ ক্ষুধা এবং নিদ্রায় আকুল। আবার কোথা হইতে মাছির ন্যায় কি গায়ে পড়িতেছে। তাহার দংশনে সকলে আরও অস্থির হইয়া পড়িল। শ্রাবণ মাসে এতদঞ্চল অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর হয়। আমরা ব্যাকুল চিত্তে ক্রমে রাত্রি ৯টার সময় বিছাকরির পান্থনিবাসে পৌঁছিয়া নিশ্চিন্ত হইলাম। দোতলায় প্রশস্ত গৃহে বেঞ্চ টেবিল এবং শয়নের জন্য খাট রহিয়াছে। দেখিলাম। তখনি শয্যা প্রস্তুত হইল। শিশুগণ শয়ন করিল, এবং সমস্ত রাত্রি নিদ্রায় অতিবাহিত করিল। আমরা দুইটী অন্নের প্রত্যাশায় রাত্রি ১০॥|১১টা পর্য্যন্ত অপেক্ষা করিয়া অর্দ্ধ সিদ্ধ দুটী ভাত খাইয়া শয়ন করিলাম। পর দিন প্রাতে আহার করিয়াই পুনরায় যাত্রা করিলাম। বিছাকরি হইতে বরাবর একটা পার্ব্বত্য নদীর বারিশূন্য তল ধরিয়া চলিলাম। কেবল বালুকা এবং নুড়ি, মধ্যে মধ্যে ঝির ঝির করিয়া জল আসিতেছে। কাটমণ্ডু যাইবার পথ বরাবর প্রায় এই প্রকার। হয় নদীর মধ্য দিয়া না হয় নদীর ধার দিয়া যাইতে হয়। মধ্যে মধ্যে বাহকগণ আমাদের স্বন্ধে লইয়াই খরস্রোতা নদীতে অবতরণ করিয়া পার হইয়া যায়। বিছাকরি হইতে তিন ক্রোশ মাত্র দূরে চুরিয়ার পান্থনিবাসে আমরা আশ্রয় লইলাম। চুরিয়ার পান্থশালাটী যদিও বিছাকরির ন্যায় প্রশস্ত নয়, কিন্তু স্থানটী বেশ নির্জ্জন এবং সুন্দর। পর দিন প্রাতে আহারাদি