পাতা:নেপালে বঙ্গনারী - হেমলতা দেবী.pdf/২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নেপালে বঙ্গনারী।

হইয়া আসিল। এই ভাবে অতি কষ্টে শিখরে আসিয়া উপস্থিত হইলাম। বাহকগণ কার্পেট নামাইয়া হাঁপাইতে লাগিল; আমরা বাঁচিলাম। এই স্থানের নাম চিসাপাণিগড়ি। এখানে গড় এবং সৈন্য আছে। এই পথে শত্রুর আগমন প্রতিরোধ করিবার জন্য সমুদয় ব্যবস্থা আছে। স্থানটী খুব উচ্চ এবং শীতল। চিসাপাণিগড়ি হইতে নীচের পথে ভীমফেদীর উপত্যকা দেখা যায়। গড়িতে পৌঁছিয়া দেখিলাম আমাদের জন্য কাটমণ্ডু হইতে লোক আসিয়াছে। তাহাদের সঙ্গে ফল খাদ্যদ্রব্য ছিল। উহা আনিয়া শিশুগণ ও বাহকগণ সকলে আনলে ভোজন করিল। আজ আমাদের পথের শেষ দিন, আজ পথ যেরূপ কঠিন, দূরত্বও তদ্রুপ। গড়ি হইতে কমে নামিয়া কুলিখানি নামক সুন্দর স্থানে আসিলাম। সেখানে খরস্রোতে গর্জ্জন করিতে করিতে এক পার্ব্বত্য নদী নামিয়া যাইতেছে। তাহার উপর সুন্দর পুল। পুলের উপর দিয়া সকলে পদব্রজে পর পারে উপস্থিত হইলাম। সেখানে অতি সুরম্য পান্থনিবাস রহিয়াছে, কিন্তু আমাদের সেদিন বিশ্রামের সময় নাই। আজ ক্রমাগত পাহাড় ভাঙ্গা। একটা হইতে অন্যটা—সেটা হইতে আর একটা। এই প্রকারে ক্রমাগত তিনটা উচ্চ উচ্চ পাহাড় অতিক্রম করিলাম। ক্রমে সূর্যাস্ত হইল। কিন্তু আমাদের গন্তব্যস্থান বহুদূরে। আমরা চন্দ্রগিরি নামক শেষ পাহাড়ে নামিতে লাগিলাম। সে কেবলই নামা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা যায় অবতরণ করিতেছি। চন্দ্রগিরি হইতে কাটমণ্ডুর উপত্যকা সন্ধ্যার অন্ধকারে অস্পষ্ট দেখা যাইতে লাগিল। ক্রমে অন্ধকার ঘনীভূত হইয়া আমাদের