পাতা:নেপালে বঙ্গনারী - হেমলতা দেবী.pdf/৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০
নেপালে বঙ্গনারী।

অলঙ্কার দেখা যায় না। উপর হাতে কোন প্রকার অলঙ্কার কিম্বা নাসিকায় নথ এদেশে কখনও দেখি নাই।

 রাজ পরিবারের এবং ধনী গৃহস্থদের মহিলাগণ সাধারণ স্ত্রীলোকদিগের ন্যায় কোঁচা করিয়া বস্ত্র পরিধান করেন না। তাঁহার পাজামা, জ্যাকেট এবং ওড়না ব্যবহার করেন। প্রায় বিশ গজ কাপড়ে একটী পাজামা প্রস্তুত হয়। পরিধানকালে তাহাকে পাজামা বলিয়া বোধ হয় না—অনেকটা পেটিকোট কিম্বা বেলুনের ন্যায় দেখায়। বিধবা ভিন্ন কেহ শুভ্র বসন পরিধান করে না। উচ্চ পরিবারের রমণীগণ সর্ব্বদা জুতা মোজা পরিধান করিয়া থাকেন, তাহাতে হিন্দু আচারের কোন ব্যতিক্রম হয়না। পূজা কিম্বা আহারের সময় জুতা মোচন করিলেই চলে। নেপালী সুন্দরীগণ যখন বেশবিন্যাস করিয়া শকটারোহনে রাজপথে বাহির হন তখন তাঁহাদিগকে পরীর দল কিম্বা প্রজাপতির ঝাঁকের ন্যায় দেখায়। কজ্জল শোভিত আয়ত নয়ন, তদুপরি অঙ্কিত ভ্রূযুগল, রাজ পরিবারের মহিলাগণ স্বাভাবিক ভ্রূর পরিবর্ত্তে কজ্জ্বল দ্বারা ভ্রূ অঙ্কিত করেন। রক্তাভ অধরোষ্ঠগণ্ডস্থলবিশিষ্ট শুভ্রমূর্ত্তি রমণীকুল। যখন বিচিত্র বর্ণের পরিচ্ছদে সজ্জিত হইয়া রাজপথে দর্শন দেন এবং তাঁহাদের সূক্ষ্ম ওড়না বায়ুভরে উড়িতে থাকে তখন যে তাঁহাদিগকে পরীর দল বলিয়া ভ্রম হইবে, তাহাতে আর বিচিত্র কি? নেপালীরা গোঁড়া হিন্দু বটে কিন্তু আমাদের দেশের আচার ব্যবহারের সহিত ইহাদের পার্থক্য অনেক। শীতপ্রধান দেশ বলিয়াই বোধ হয় এখানে অবগাহন এবং বস্ত্র পরিবর্ত্তনের রীতি সেরূপ