পাতা:নেপালে বঙ্গনারী - হেমলতা দেবী.pdf/৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নেপালের অধিবাসীগণ।
২৩

মাতা কিম্বা অন্যান্য গুরুজনের চরণ মস্তকে ধারণ করিয়া অভিবাদন করিতে হয়। ব্রাহ্মণগণের পদরজঃ গ্রহণের ব্যবস্থা কিঞ্চিৎ হাস্যোদ্দীপক। ধুলিতে মস্তক রাখিয়া পদরজঃ গ্রহণের পূর্ব্বেই তাঁহারা অর্দ্ধপথে মস্তকে চরণ তুলিয়া দেন। সকল প্রকার ক্রিয়া কর্ম্মে বার ব্রতে ব্রাহ্মণদিগকে অগ্রে দান করিতে হয়। প্রত্যেক সম্পন্ন গৃহস্থ কুল পুরোহিতকে যথেষ্ট সম্মান এবং দক্ষিণা দিয়া থাকেন। অত্যন্ত গুরুতর অপরাধ করিলেও ব্রাহ্মণের প্রাণদণ্ডের ব্যবস্থা নাই। মহারাজ জঙ্গ বাহাদুরের সময় হইতে এদেশে সহমরণের ব্যবস্থা স্থগিত হইয়াছে। তৎপূর্ব্বে দলে দলে গুর্খারমণীগণ পতির চিতানলে প্রাণ বিসর্জ্জন করিতেন। বর্ত্তমান সময়ে নেপালে সহমরণ প্রথা একেবারে নাই। পূর্বে নেওয়ারদিগের ভিতরও সহমরণ প্রথা ছিল। কাটমণ্ডু সহরবাসীগণ ভিন্ন, নেপালের জনসাধারণ কোন প্রকার বিলাসিতার ধার ধারে না। ভারতবর্ষের পুরাকালের অবস্থা যদি কিয়ৎ পরিমাণে হৃদয়ঙ্গম করিতে হয়, তাহা হইলে নেপালের অবস্থা দেখিলেই বুঝিতে পারা যাইবে। নেপালী মাত্রকেই কৃষক বলিলে অত্যুক্তি হয় না। প্রত্যেক গৃহস্থ বৎসরের চাউল তরকারী আপনার ক্ষেত্রে উৎপাদন করে। ভারতবর্ষের ন্যায় নিরন্ন ব্যক্তির বাহুল্য এখানে নাই। গৃহে গাভী কিম্বা মহিষ, ক্ষেত্রে মোটা চাউল, মক্কা গম, শাক তরকারী, অধিকাংশের গৃহেই আছে। প্রভাতে গাত্রোখান করিয়াই দরিদ্র এবং ধনীর গৃহে অগ্নি প্রজ্জ্বলিত হয়। তৎপরে সকলে দিবসের কার্য্যে নিযুক্ত হয়।