পাতা:পণ্ডিতমশাই-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ 4 (t তাহাকে দেখিতে পাইয়াই কুঞ্জ সেইখানে উপুড় হইয়া পড়িয়া সজোরে মাথা খুঁড়িতে লাগিল—ওই রাক্ষুদীই আমার ছোটবোনট:ক খেয়েছে— ওরে কেন মতে আমি এখানে এ ছিলুম রে-ওরে আমার কি হল রে! ব্ৰজেশ্বরী কাছে আসিয়া তাহার হাত ধরিয়া টানিতেই সে তাহাকে ধাক্ক মারিয়া ফেলিয়া দিল—দুর হ—দূর হ ! ছুস নি আমাকে । ব্রঙ্কেশ্বরী উঠিয়া দাড়াইয়া এবার জোর করিয়া তাঙ্গকে ঘরে লইয়৷ গিয়া বলিল, শুধু কাদাল আর চেচালেই কি বোনকে ফিরে পাবে? আমি । বলচি, সে কক্ষণ ডুবে মরে নি । কুঞ্জ বিশ্বাস করিল না, এক ভাবেই কাদিতে লাগিল । এই বোনটিকে সে অনেক দুঃখ-কষ্টে মানুষ করিয়াছে এবং যথার্থ-ই তাহাকে প্রাণতুল্য ভালবাসিত। পূর্বে অনেকবার কুসুম রাগ করিয়া জলে ডোবার ভয় দেখাইয়াছে—এখন তাহার সমস্ত বুক ভরিয়া কোথাকার খানিকটা জল এবং তাহার অভিযানিনী ছোটবোনটির মৃত দেহ ভাসিয়া বেড়াইতে লাগিল । ব্রজেশ্বর সরেছে স্বামীর চোথ মুছাইয়া দিয়া কহিল, তুমি স্থির হও— আমি নিশ্চয়ই বলুচি, সে মরে নি। - কুঞ্জ সজল চক্ষে ফ্যাল ফ্যাল করিয়া চাহিয়ারছিল। তাহার স্ত্রী আর একবার ভাল করিয়া আঁচল দিয়া চোখ মুছাইয়া বলিল, আমার নিশ্চয় বোধ হচ্ছে, ঠাকুরঝি লুকিয়ে বাড়লে চলে গেছেন। কুঞ্জ অবিশ্বাস করিয়া মাথা নাড়িয়া বলিল, ন না, সেখানে সে যাবে না। চরণকে ছাড়া তাদের কাউকে সে দেখতে পারত না। ব্ৰজেশ্বরী কহিল, এটা তোমাজের পাহাড়-পৰ্ব্বত ভুল ! আমি যেমন তোমাকে ভালবাসি, সেওঁ তার স্বামীকে তেমনি ভালবাসে। যে যাই হোক, চরণের জন্তও ত সে যেতে পারে । *