পাতা:পণ্ডিতমশাই-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ సిరి বাহির ই ই স্বতাঙ্ক কণ্ঠে প্রশ্ন করিল, ই ঠাকুঝি, মা তোমাকে কটাকা মাইনে দেবে বলে এনেচে গা ? মা অদূরে ভাড়ারের স্বমুখে বসিয়া কাজ থিয়েছিলেন, মেয়ের তীব্র শ্লেষাত্মক প্রশ্ন শুনিয়া বিস্ময়ে ক্রোধে গর্জিয়া উঠিলেন, এ তোর কি রকম কথার ছিরি লা ? মানুষ আপনার জনকে কি মাইনে দিয়ে ঘরে আনে ? মেয়ে উত্তর দিল, আপনার জন আমার, তোমার এ কে যে, দুঃখী মানুষকে দিয়ে দাসী-বৃত্তি করিয়ে নেবে, মাইনে দেবে না ? প্রত্যুত্তরে মা ক্রতপদে কাছে আসিয়া কুসুমের হাত হইতে বাসনগুলো একটানে ছিনাইয়া লইয়া নিজেই পুকুরে চলিয়া গেলেন। কুসুম হতবুদ্ধির ন্যায় দাড়াইয়া রহিল, ব্রজেশ্বরী তাহার মুখের দিকে চাহিয়া মুখ টিপিয়া হাসিয়া, তা যাক ! বলিয়াই ঘরে চলিয়া গেল। ইহার পর দুই-তিন দিন তিনি কুসুমকে লক্ষ্য করিয়া বেশ রাগ-ঝাল করিলেন, কিন্তু অকস্মাৎ একদিন তাহার ব্যবহারের পরিবর্তন দেখিয়া ব্ৰজেশ্বরী আশ্চৰ্য্য হইল। কাল রাত্রে শরীর ভাল নাই বলিয়া কুসুম থায় নাই, আজ সকালেই গৃহিণী স্নানাঙ্গিক করিয়া খাইয়া লইবার জন্য ভহাকে পীড়াপীড়ি কুরিতে লাগিলেন ; - ব্ৰজেশ্বরী কাছে আসিয়া চুপি চুপি কছিল, মা ভোল ফেরালেন কেন, তাই ভাবছি ঠাকুরঝি • " . .কুসুম চুপ করিয়া রহিল, কিন্তু মেয়ে মাকে বেশ চিনিত, তাই দুদিনেই এই অকস্মাং পরিবর্তনের কারণ সন্দেহ করিয়া মনে মনে আগুন হইয়া উঠিল। গোবৰ্দ্ধন বলিয়া গৃহিণীর এক বোনণে ছিল, সে অপরিমিত তাড়ি ও গাঙ্গা-গুণি খাইয় চেহারাটা এমন কার্য রাখিয়াছিল যে, বয়স পয়ত্রিশ কি পয়ষট্টি, তাহ ধরিবার যে ছিল না । কেই মেয়ে দেয় নাই