পাতা:পত্রপুট-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৩০

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
পত্রপুট
১৯

পাঁচ

সন্ধ্যা এল চুল এলিয়ে
অস্ত-সমুদ্রে সদ্য স্নান ক’রে।
মনে হোলো, স্বপ্নের ধূপ উঠছে
নক্ষত্রলোকের দিকে।
মায়াবিষ্ট নিবিড় সেই স্তব্ধ ক্ষণে—
—তার নাম করব না—
সবে সে চুল বেঁধেছে, পরেছে আসমানি রঙের শাড়ি,
খোলা ছাদে গান গাইছে একা।
আমি দাঁড়িয়ে ছিলেম পিছনে
ও হয়তো জানে না, কিংবা হয়তো জানে॥

ওর গানে বলছে সিন্ধু কাফির সুরে—


—চলে যাবি এই যদি তাের মনে থাকে
  ডাকব না ফিরে ডাকব না,
ডাকি নে তাে সকালবেলার শুকতারাকে।—


শুনতে শুনতে স’রে গেল সংসারের ব্যাবহারিক আচ্ছাদনটা,
যেন কুঁড়ি থেকে পূর্ণ হয়ে ফুটে বেরােল
অগােচরের অপরূপ প্রকাশ;
তার লঘু গন্ধ ছড়িয়ে পড়ল আকাশে;
অপ্রাপণীয়ের সে দীর্ঘনিঃশ্বাস,
দুরূহ দুরাশার সে অনুচ্চারিত ভাষা।