পাতা:পত্রাবলী (১৯১২-১৯৩২) - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/১০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫২
Fitz William Hall
Cambridge
২রা মার্চ্চ, ১৯২০

হেমন্ত,

 কয়েকদিন হইল তোমার পত্র পাই নাই বা তোমাকে পত্র দিই নাই। যখন সময় কম থাকে তখন শুধু তাদেরই লেখা যায়, যাহাদিগকে দুই লাইনে লেখা যাইতে পারে।

 সেদিন “ভারতীয় মজলিসের” বাৎসরিক ভোজ হইয়া গেল। Mr. Horniman আমাদের অতিথি (Guest) হয়ে এসেছিলেন। ওখানকার বিদেশী বন্ধুরাও কেহ কেহ এসেছিলেন। মিসেস রায় গত রবিবারের মজলিসের সভায় Rights of the Indian mother সম্বন্ধে বক্তৃতা দিয়েছিলেন। বাস্তবিক কবে আবার ভারত রমণীবৃন্দ সমাজের শিক্ষাদাত্রীরূপে আসন গ্রহণ করিবেন? না জাগিলে ভারত মহিলা, ভারত কভু জাগিবে না। যেদিন Mrs. Sarojini Naidu এখানে বক্তৃতা দিয়েছিলেন সেদিন আনন্দে বুক দশহাত ফুলে উঠেছিল— সেদিন দেখিলাম, ভারত রমণীর আজও এমন শিক্ষাদীক্ষা, গুণ, চরিত্র আছে যে পাশ্চাত্ত্যের সম্মুখে দাঁড়াইয়া আত্মপরিচয় দিতে পারেন। তারপর লণ্ডনে ডাক্তার মৃগেন মিত্রের স্ত্রীর সঙ্গে আলাপ হয়। দেখলাম ডাক্তার মিত্র moderate in politics কিন্তু মিসেস মিত্র extremist. আনন্দে বুক দশহাত ফুলে উঠল। তারপর “গিরীশদার মা”—মিসেস ধরের সঙ্গে আলাপ হয়—তিনিও extremist. এসব দেখে মনে হয় যে, যে দেশে রমণীর আদর্শ এত উচ্চে সে দেশের উন্নতি না হয়ে পারে না। এদেশে যে সকল ভারতীয় মহিলারা আসেন— আমার বিশ্বাস তাঁদের প্রাণে গভীর স্বদেশপ্রেমের উদ্রেক হয়, কারণ, মাতৃহৃদয় বড় কোমল ও গভীর।

৮৮