দেশের সত্যকারের কাজ করা চলে না। এক কথায় সিভিল সার্ভিসের আইন কানুনের প্রতি আনুগত্যের সঙ্গে জাতীয় ও আধ্যাত্মিক আকাঙক্ষাকে মেলানো চলে না।
আমি বুঝিতেছি যে এসব কথা বলিয়া কোনো ফল হইবে না, কারণ আমার ইচ্ছায় কিছু হইবে না। সিভিল সার্ভিস সম্বন্ধে আপনার কোন মোহ নাই তাহা আমি জানি, কিন্তু আমার চাকুরি ছাড়ার কথাতে বাবা যে খড়্গহস্ত হইয়া উঠিবেন সে বিষয়ে সন্দেহ নাই। তিনি আমাকে যত শীঘ্র সম্ভব জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত দেখবার জন্য উদগ্রীব!....
·····সুতরাং দেখিতেছি যে অর্থনৈতিক কারণে ও স্নেহের বন্ধনের ফলে আমার ইচ্ছাকে আদৌ আমার বলিয়া দাবী করিতে পারি না। কিন্তু একথা বিনা দ্বিধায় বলিতে পারি যে আমার ইচ্ছাই যদি চূড়ান্ত হইত তাহা হইলে সিভিল সার্ভিসে আমি কখনই যোগ দিতাম না।
আপনি হয়ত বলিবেন যে এ চাকুরি এড়াইবার চেষ্টা না করিয়া ইহার ভিতরে প্রবেশ করিয়া ইহার পাপকে দূর করাই উচিত এবং সে কথা বলিলে অবশ্যই অন্যায় বলা হইবে না। কিন্তু যদি তাহাই করি তাহা হইলেও যে কোনোদিন অবস্থা এমন অসহ্য হইয়া দাঁড়াইতে পারে যে ইস্তফা দেওয়া ভিন্ন আমার গত্যন্তর থাকিবে না। এখন হইতে পাঁচ দশ বৎসর পরে যদি এরূপ পরিস্থিতির উদ্ভব হয় তাহা হইলে জীবনে নূতন করিয়া পথ করিয়া লইবার উপায় থাকিবে না। সেক্ষেত্রে আজ আমার সম্মুখে অন্য পথ উন্মুক্ত রহিয়াছে।
সন্দেহবাদী লোকে বলিবে যে চাকুরি প্রশস্ত কোলে একবার ঠাঁই করিয়া লইবার পর আমার সমস্ত তেজ উবিয়া যাইবে। কিন্তু এই ক্ষয়কারী প্রভাব আমার উপর কিছুতেই পড়িতে দিব না, এ বিষয়ে আমি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। আমি বিবাহ করিব না, সুতরাং যখন যাহা সত্য বুঝিব তাহাকে পালন করার পথে সাংসারিক বিবেচনার অধীন হইয়া থাকিতে হইবে না।
৯৭