পাতা:পত্রাবলী (১৯১২-১৯৩২) - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/১১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 আমার মনের গঠন যেরূপ তাহাতে আমার সত্যই সন্দেহ হয় যে সিভিল সার্ভিসের পক্ষে আমার যোগ্যতা আছে কি না। বরঞ্চ আমার ধারণা, যেটুকু ক্ষমতা আমার আছে তাহা অন্য ভাবে আমার নিজের এবং আমার দেশের উপকারে লাগাইতে পারিব।

 এবিষয়ে আপনার মতামত জানিতে পারিলে আনন্দিত হইব। বাবাকে এ বিষয়ে কিছু লিখি নাই—কেন তাহা ভাবিয়া পাইতেছি না। তাঁহার মতও জানিতে পারিলে সুবিধা হইত।

(ইংরাজী হইতে অনূদিত)

৫৭
২৬।১।২১

 ........ আপনি বলিতে পারেন যে এই কুৎসিত ব্যবস্থাকে পরিহার না করিয়া ইহার ভিতরে প্রবেশ করিয়া শেষ পর্য্যন্ত ইহার সহিত সংগ্রাম করাই আমার কর্ত্তব্য। কিন্তু সে সংগ্রাম করিতে হইবে একাকী কর্ত্তৃপক্ষের হুমকির মধ্য দিয়া, অস্বাস্থ্যকর স্থানে বদলি সহ্য করিয়া, উন্নতির পথ বন্ধ করিয়া। চাকুরির মধ্যে থাকিয়া এইভাবে যেটুকু উপকার করা যায় সেটুকু বাহিরে পুরাপুরি কাজে লাগার তুলনায় যৎসামান্য। শ্রীযুক্ত রমেশচন্দ্র দত্ত অবশ্যই সার্ভিসের আওতায় অনেক কাজ সম্পন্ন করিয়াছিলেন, তবু আমার মনে হয় আমলাতন্ত্রের বাহিরে থাকিলে তাঁহার কাজ দেশের পক্ষে অনেক অধিক মঙ্গলজনক হইত। তাহা ছাড়া এখানে আসল প্রশ্ন নীতির। নীতি অনুসারেই আমি এই শাসনযন্ত্রের অংশ হওয়ার কথা চিন্তা করিতে পারি না। গোঁড়ামিতে, স্বার্থান্ধ শক্তিতে, হৃদয়হীনতায়, সরকারী মারপ্যাঁচের জটিলতায় এই শাসনযন্ত্র বিকল, ইহার প্রয়োজনের দিন বিগত।

৯৮