পাতা:পত্রাবলী (১৯১২-১৯৩২) - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/২৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

শ্বশুর বাড়ীতে। বড়দিদির এখন কোথায়? বিমল কোথায় ও কেমন পড়ছে?

 এবার এখানে জুন জুলাই মাসে অপেক্ষাকৃত ঠাণ্ডা তবে এর পর আবার গরম পড়বে কিনা জানি না। কিন্তু এ দুই মাসে এখানকার স্বাস্থ্য মোটেই ভাল নয়। এখানে একে একে সকলে শয্যা গ্রহণ করেছেন। আমি অবশ্য খাড়া আছি, তবে শীত না পড়লে আমার পেটের অবস্থা যে সারবে বা ভাল হবে তা মনে হয় না। গত বৎসরের মত এখন আর কোন কাজে মন লাগে না—কোন রকমে দিন কাটান হচ্ছে। শীতটা যখন আসবে তখন আবার পড়াশুনায় ঝোঁক দিব মনে করছি। কাগজে দেখলুম যে এবার ওখানে খুব গরম; এবং গরমের দরুন লোক মারাও গেছে। এখন গরমটা কি রকম?

 আমি মেজদাদাকে লিখেছিলুম যাতে ছেলেমেয়েদের গানবাজনা ও চিত্রাঙ্কন শেখান হয়—বাড়ীতে মাষ্টার রেখে। প্রথমে তারা হয় তো স্বেচ্ছায় শিখতে চাইবে না এবং জোর করে শেখাতে হবে। কিন্তু এর ভাল ফল তারা সারাজীবন ভোগ করবে। আমি যদি গানবাজনা বা চিত্রাঙ্কন জানতুম তাহলে এখানকার দিনগুলি আরও আনন্দে কাটাতুম।

 টিয়াপাখী খেয়ে খেয়ে বড় হচ্ছে—কিন্তু কথা কইতে যে শিখবে তার কোনও লক্ষণ দেখছি না। পায়রার বংশ বেড়েই চলেছে— এখন ছয় জোড়ায় দাঁড়িয়েছে। দুই জোড়া সাদা কালো মেশান, এক জোড়া লাল, এক জোড়া সাদা এবং দুই জোড়া ময়ুরপঙ্খী। ময়ুরপঙ্খী পায়রা দেখতে বেশ সুন্দর। ময়ুরের মত প্যাখম ধরে সর্ব্বদা ঘুরে বেড়ায়। ডিম দুই জোড়া হয়েছে— তা দেওয়া হচ্ছে। এগুলি ফুটলে বংশ আরও বাড়বে। আমাদের এখানে যে ছোট্ট পুকুর বা চৌবাচ্চা আছে তার ধারে যখন সকালবেলা পায়রার পাল সারি দিয়ে বসে তখন বড় সুন্দর বোধ হয়।

২৫০