পাতা:পত্রাবলী (১৯১২-১৯৩২) - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/২৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পেয়ে আনন্দিত হয়েছি। এখানে এখনও শীত কিছু আছে—তবে এই মাসের মধ্যে বোধ হয় শেষ হয়ে যাবে। মার্চ্চ মাসটা বসন্তের হাওয়া বইবে, তারপর এপ্রিল মাসে রীতিমত গরম পড়ে যাবে। গত বৎসর এপ্রিল মাসেই সব চেয়ে বেশী গরম পড়েছিল।

 আমাদের ফুলের বাগানে এবার নানা রঙের ফুল ফুটে বেশ শোভা ধরেছে। তবে এগুলি অধিকাংশই Season Flower। সুতরাং শীতের শেষে গরমের প্রতাপ আরম্ভ হ’লে অদৃশ্য হয়ে যাবে। আপাততঃ বাগানের দিকে তাকালে মনটা বেশ প্রসন্ন হয়।

 গতকাল আমরা এখানে শ্রীশ্রীসরস্বতী পূজা করেছি। মূর্ত্তি এখানেই গড়ান হয়েছিল এবং বেশ ভালই হয়েছে। এ দেশে যাহারা সরস্বতী পূজা করে তাহারা গঙ্গায় (অর্থাৎ ইরাবতীতে) ভাসায় না।

 আমার শরীরের অবস্থা মেজদাদাকে যে পত্র দিই তার থেকে পেয়ে থাকবেন। আগের থেকে খারাপ বই ভাল বোধ হয় না। ওজন কিছু কমেছে, এখন ১৩৮ পাউণ্ড। ছোটদাদা আগামী বুধবার অথবা বৃহস্পতিবার এখানে এসে বোধহয় পৌঁছাবেন।

 নতুন মামাবাবু পূর্ব্বের থেকে কিছু ভাল আছেন জেনে খুব সুখী হয়েছি। তিনি এখন কোথায় আছেন—ঠিকানা লিখবেন।

 বাবা বোধ হয় সরস্বতী পূজার ছুটিতে কলকাতায় এসেছিলেন।

 আমাদের পায়রার খুব বংশ বৃদ্ধি হচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে পায়রার খোপও বাড়াতে হচ্ছে। মুরগী মোরগের পালও খুব বেড়ে গেছে। (এতে হিন্দুয়ানী নষ্ট হবে না তো?) ২।৩ জোড়া বিলিতি মোরগ ও মুরগীর সাহায্যে কি করে অল্প দিনের মধ্যে এক পাল ভাল জাতের মোরগ ও মুরগী হতে পারে—তা আমরা হাতে হাতে দেখছি। পায়রার সম্বন্ধেও ঐ এক কথা খাটে। তবে ময়ূরপঙ্খীদের বাঁচান গেল না— তারা ক্রমাগত মরে যায়। টিয়াপাখী বেঁচে আছে—মনের সুখে কি দুঃখে তা বলতে পারি না। নানাপ্রকার আওয়াজ করে এক শিস্ দেয়। কথা এখনও বলতে শিখে নাই তবে শিখতে পারে।

২৭০