পাতা:পত্রাবলী (১৯১২-১৯৩২) - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৩০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

টেম্পারেচার চার্টও লেখা হইতেছে, তাছাড়া মাঝে মাঝে সহকারী চিকিৎসকগণ আমার স্বাস্থ্য সম্বন্ধে নানা খুঁটিনাটি বিষয় লিপিবদ্ধ করিয়া রাখিতেছেন। এরকম একজন নিষ্প্রাণ চিকিৎসকের নিকট হইতে উপযুক্ত মনোযোগ বা সহৃদয় ব্যবহার আশা করা কি করিয়া সম্ভব আমি ঠিক বুঝিয়া উঠিতে পারি না। ইহাতে আশ্চর্য্যের কিছুই নাই যে, গত ৪০ দিন যাবৎ অর্থাৎ রেঙ্গুন জেলে আসার পর হইতে আজ সকাল পর্য্যন্তও আমার আদৌ কোনও চিকিৎসা হয় নাই।

 ৬। এরূপ নিষেধাজ্ঞা জারী করা হইয়াছে, যদি কোনও বন্দী আমার সহিত কথা বলে তাহা হইলে তাহাকে শাস্তি দেওয়া হইবে। ইহা হইতেই আমাকে এখানে কিরূপ নিঃসঙ্গতার মধ্যে রাখা হইয়াছে তাহা আপনি বুঝিতে পারিবেন। একবার এক বন্দী আমার সেলের রক্ষীর নিকট জানিতে চাহে যে, বিশেষ একটি স্নানাগার সর্ব্বসাধারণ ব্যবহার করিতে পারে কিনা; সে তখন সবেমাত্র এ জেলে নূতন আসিয়াছে এবং এখানকার নিয়মকানুনও তাহার জানা ছিল না; কিন্তু এজন্য ডেপুটি সুপারিণ্টেণ্ডেট Mr. Sutherland তাহার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনিয়াছিলেন।

 ৭। ইতিপূর্ব্বে অন্যান্য I. M. S. অফিসারগণ আমার প্রতি যেরূপ ব্যবহার করিয়াছেন তাহার সহিত এ ব্যবহারের পার্থক্য আমি স্পষ্ট অনুভব করিতে পারিতেছি। এমন কি রেঙ্গুন জেনারেল হাসপাতালের Major Cormack-ও, যিনি আমার X-ray করিয়াছিলেন, এই জেলের সুপারিণ্টেণ্ডেণ্ট অপেক্ষা আমার চিকিৎসার ব্যাপারে অনেক বেশী যত্ন লইয়াছেন। যখনই তিনি আমাকে দেখিতে আসিয়াছেন তখনই প্রচলিত রীতির ব্যতিক্রম ঘটাইয়া তিনি আমার স্বাস্থ্য সম্বন্ধে নানা খুঁটিনাটি বিষয়ে খোঁজখবর করিয়াছেন।

 ৮। এই সব তুচ্ছ বিষয়ের প্রতি আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করার কোনও ইচ্ছা আমার ছিল না। কিন্তু সম্প্রতি অবস্থা যেরূপ

২৭৯