পাতা:পত্রাবলী (১৯১২-১৯৩২) - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৩১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

হইতে পারে এবং সরকারই বা এ অনুমোদনকে কিরূপ রাজনৈতিক চাল চালিবার জন্য ব্যবহার করিবেন তাহা বিচার করিবার কোন প্রয়োজন তাঁহার ছিল না; তজ্জন্য আমিও তাঁহার এ কার্য্যের নিন্দা করিতে পারি না। তাঁহার কয়েকজন রোগী সুইস্ স্বাস্থ্যাশ্রমে গিয়া রোগমুক্ত হইয়াছে তাহা দেখিয়াই তিনি আমার সম্বন্ধেও অনুরূপ প্রস্তাব করিয়াছেন—অন্যান্য যক্ষ্মারোগীকেও যেরূপ করিয়া থাকেন। যে সকল অর্থবান্ রোগী সুইট্‌জারল্যাণ্ডের বাস ও শুশ্রূষার ব্যয় বহন করিতে পারেন তাঁহাদের পক্ষে এ প্রস্তাবই শ্রেষ্ঠ। এ অবস্থায় আমি যে কোনরূপে নিজেকে কোন প্রস্তাব পালনে বাধ্য করি নাই তাহা স্পষ্ট বুঝা যাইবে।

 দেখা যাইতেছে, সরকার ছোটদাদার প্রদত্ত রোগ বিবরণ গ্রহণ করেন নাই, যদিও তাঁহার প্রদত্ত স্বাস্থ্য অর্জ্জন উপায় গ্রহণ করিয়াছেন, কারণ মিঃ মোবার্লী স্পষ্টই বলিয়াছেন, “সুভাষচন্দ্র যে অত্যধিক পীড়িত হন নাই এবং একেবারে কর্ম্মশক্তিহীন হন নাই, তাহা সকলেই বুঝিতে পারিবেন।” আমার জানিতে কৌতূহল হয়, সরকার কবে আমাকে “অত্যধিক পীড়িত” বা “একেবারে কর্ম্মশক্তিহীন” মনে করিবেন। যেদিন সকল চিকিৎসক ঘোষণা করিবেন, আমার রোগমুক্তি অসম্ভব এবং মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে মৃত্যু হইতে পারে, সেই দিন কি? তা ছাড়া, ছোটদাদার রোগ-বিবরণ যদি তাঁহারা স্বীকার করিতে রাজী না হন, তাহা হইলে যাহা মাত্র বাহ্যতঃ তাহার অনুমোদন—তাহা গ্রহণ করিতেই বা সরকার এত ব্যস্ত কেন? ছোটদাদা এ অনুমোদন করেন নাই যে, আমাকে বাড়ীতে যাইতে দেওয়া হইবে না। বা বিদেশে যাইবার পূর্ব্বে আমি আমার আত্মীয়-স্বজনকে দেখিতে পাইব না। তিনি একথাও বলেন নাই যে, আমি যে জাহাজে যাইব তাহা কোন ভারতীয় বন্দরে নোঙর করিতে পারিবে না। তিনি এ-কথাও বলেন নাই যে, যদি আমার নষ্ট স্বাস্থ্য উদ্ধার হয় তাহা হইলে

২৮৮