পাতা:পত্রাবলী (১৯১২-১৯৩২) - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৩১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

যতদিন অর্ডিনান্স আইন থাকিবে ততদিন দেশে থাকিতে পারিব না। এই সকল দেখিয়া আমার সন্দেহ হয়, সরকারের প্রকৃত উদ্দেশ্য আমার নষ্ট স্বাস্থ্য উদ্ধারের ব্যবস্থা নয়।

 মিঃ মোবার্লী প্রকৃত পক্ষে বলিয়াছেন যে, দুইটি পথ অবশিষ্ট আছে। তাহা (১) জেলে বন্দী হইয়া অবস্থান কিংবা (২) কোন বিদেশে যাইয়া স্বাস্থ্য অর্জ্জনের চেষ্টা ও অনির্দ্দিষ্ট কালের জন্য অবস্থান।

 কিন্তু সত্যই কি এই দুয়ের মধ্যে অন্য কোন মধ্যপন্থা অবশিষ্ট নাই? আমার তা মনে হয় না। সরকারের ইচ্ছা যে আমি অর্ডিনান্স আইন উঠিয়া না যাওয়া পর্য্যন্ত, অর্থাৎ জানুয়ারী ১৯৩০ সাল পর্য্যন্ত বন্দী থাকি। কিন্তু এ আইন যে ১৯৩০ সালের পরেও পুনরায় নূতন করিয়া আলোচনা হইবে না তাহা কে বলিতে পারে? গত অক্টোবর মাসে সি, আই, ডি, পুলিশের কর্ত্তা মিঃ লোম্যানের সহিত এ প্রসঙ্গে আমার যে কথা হইয়াছিল তাহা একেবারেই আশাপ্রদ নয়, এবং ১৯২৯ সালে যদি এই অর্ডিন্যান্স আইন চিরকালের জন্য বিধিবদ্ধ করিয়া রাখিবার আন্দোলন হয় তাহাতে কিছুমাত্র আশ্চর্য্যান্বিত হইব না। তাহা হইলে আমাকে চিরস্থায়ী ভাবে বিদেশে বাস করিতে হইবে এবং এইরূপ নির্ব্বাসনের জন্য নিজেকেই দায়ী মনে করিতে হইবে। যদি এ সম্বন্ধে সরকারের সত্যই কোন স্পষ্ট ইচ্ছা থাকিত তাহা হইলে আমি কবে বিদেশ হইতে ফিরিয়া আসিতে পারিব, সে কথাও ঐ প্রস্তাবে উল্লিখিত থাকিত।

 তারপর প্রবাসে আমি কিরূপ স্বাধীনতা ভোগ করিতে পাইব তাহার কোনও স্পষ্ট আশ্বাস পাওয়া যায় নাই। সুইজারল্যাণ্ডে ঝাঁকে ঝাঁকে যে সকল সি, আই, ডি, বিচরণ করে, ভারত সরকার কি আমাকে তাহাদের হাত হইতে রক্ষা করিতে পারিবেন? এ কথা অস্বীকার করা যায় না যে, আমি রাজনৈতিক সন্দেহে অভিযুক্ত

২৮৯