পাতা:পত্রাবলী (১৯১২-১৯৩২) - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৩২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

বিপদ ও অত্যাচার হাসিমুখে বরণ করিয়া লইয়া কাল কাটাইতে পারিব।

 অনুগ্রহ করিয়া এই পত্রের উত্তর শীঘ্র দিবেন। ইতি—

(ইংরাজী হইতে অনূদিত)

শ্রীগোপাললাল সান্যালকে লিখিত

১১৬
ইনসিন জেল
৫ই এপ্রিল, ১৯২৭

পরম প্রীতিভাজনেষু—

 আপনার ৫ই চৈত্রের পত্র পাইয়া আনন্দিত হইয়াছি। অনেক প্রশ্ন করিয়াছেন—কি উত্তর দিব জানি না। অনেক কথাই ত লিখিতে ইচ্ছা করে, কিন্তু লেখা যায় কি?

 শরীরের সম্বন্ধে নুতন কিছু বলিবার নাই—“যথা পূর্ব্বং তথা পরং”। পরিণামে কি দাঁড়াইবে জানি না—এখন আর শরীরের কথা ভাবি না। গত কয়েক মাসের মধ্যে আমার মনের গতি কোনও কোনও দিকে দ্রুতবেগে চলিয়াছে। আমার এই ধারণা বদ্ধমূল হইতেছে যে, জীবনে ষোল আনা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত না হইলে মেরুদণ্ড ঠিক রাখা মুস্কিল হইয়া পড়ে। জীবন প্রভাতে এই প্রার্থনা বুকে লইয়া কর্ম্মক্ষেত্রে অবতীর্ণ হইয়াছিলাম—“তোমার পতাকা যারে দাও তারে বহিবারে দাও শকতি।” ভবিষ্যতের কথা জানি না। তবে এখন পর্য্যন্ত ভগবান সে প্রার্থনা সফল করিয়া আসিতেছেন। তাই আমি বড় সুখী—সময়ে সময়ে মনে হয়, আমার মত সুখী জগতে আর কয়জন আছে? এখন এই বৃত্তাকার উন্নত প্রাচীরের বাহিরে যাইবার আশা যে পরিমাণে সুদূরপরাহত হইতেছে, সেই পরিমাণে আমার চিত্ত শান্ত ও উদ্বেগশূন্য হইয়া

২৯৬