পাতা:পত্রাবলী (১৯১২-১৯৩২) - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৩২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

প্রস্তাবে স্বীকৃত না হই তাহা হইলে অদূর ভবিষ্যতে আমাকে আলমোড়া কিংবা ব্যাঙ্গালোর অথবা উটকামণ্ড জেলে স্থানান্তরিত করা হইবে। সুতরাং এখানে বোধ হয় আমাকে বেশীদিন থাকিতে হইবে না।

 পূর্ব্বের মত এখানেও প্রত্যহ আমার জ্বর হইতেছে; যেমন২৬শে মার্চ্চ ১০০·৬; ২৭শে ৯৯·২; ২৮শে ১০০·৪; ২৯শে ১০০°; ৩০শে ১০০·৪; ৩১শে ১০০·৪।

 মেজর ফিণ্ডলে সেদিন ভাল করিয়া আমাকে পরীক্ষা করিলেন এবং কতগুলি খারাপ লক্ষণ নাকি পাইয়াছেন—ডান দিকে কাঁধের ঠিক নীচে কেমন একটা ঘড়্ ঘড়্ শব্দ পাওয়া যাইতেছে। ইহার পূর্ব্বে সিনিয়র এস এ এস-ও আমাকে পরীক্ষা করিয়া ঐ খারাপ লক্ষণগুলির কথা বলিয়াছিলেন।

 রেঙ্গুন ছাড়িবার কয়েকদিন পূর্ব্বে আমাকে একটা মিকশ্চার খাইতে দেওয়া হইয়াছিল, বোধ হয় ক্ষুধার উদ্রেক যাহাতে হয় সেই উদ্দেশ্যে। কিন্তু উহাতে কোনও ফল হয় নাই।

 ঔষধ খাওয়ার কোনও প্রয়োজন আছে কিনা জানি না। আমি এখন কোনও ঔষধ খাইতেছি না। গত ২৯শে মার্চ্চ হইতে আমি এখানে মোটরে চড়িয়া একটু একটু বেড়াইয়া আসিতেছি।

 মান্দালয়ের মত এখানে জায়গা খুব বেশী নাই। তবে আমি মেজর ফিণ্ডলেকে বলিয়াছি যে, যদি আমাকে এখানে অল্প কিছুদিনের জন্য থাকিতে হয় তাহা হইলে ইহা লইয়া আপত্তি করিব না। আমরা এখন যেখানে আছি সেখান হইতে কিছু দূরে অন্য ওয়ার্ডে আমাদের বাথরুম, রান্নাঘর ইত্যাদি। বিচারাধীন বন্দীদের যে ওয়ার্ডে রাখা হয় আমরা তাহার ওপর তলায় স্থান পাইয়াছি। জায়গাটা বেশ প্রশস্ত এবং হাওয়া আছে; তবে দিনের বেলায় একটু গরম বোধ হয়। এখানে কয়েক জন সঙ্গীও জুটিয়াছে, রেঙ্গুন জেলে যাহার অভাব একান্তভাবে বোধ করিতাম।

৩০২