পাতা:পত্রাবলী (১৯১২-১৯৩২) - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৩৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

যাইবার ক্লেশ সহ্য করিতে আমি অক্ষম। বর্ত্তমানে প্রথমতঃ ভারতের কোন স্বাস্থ্য-নিবাসে অবস্থান করিয়া আমাকে স্বাস্থ্যলাভ করিতে হইবে। কতদিনে আমি সুইট্‌জারল্যাণ্ড যাইবার উপযুক্ত স্বাস্থ্য লাভ করিব তাহার কোন স্থিরতা নাই। যাহা হউক, চিকিৎসকদের অভিমত এই যে, আমি অন্ততঃ আরও অনেকটা সুস্থ হইবার পূর্বে সুইট্‌জারল্যাণ্ড যাওয়ার কথা উঠিতেই পারে না। আবার আমি যদি ভারতের কোন স্বাস্থ্য-নিবাসে অবস্থান করিয়াই আশানুরূপ স্বাস্থ্যলাভ করিতে পারি তাহা হইলে এবং স্বেচ্ছানির্ব্বাসন বরণ করিয়া না লইলে সুইট্‌জারল্যাণ্ড যাইবার আবশ্যকতাই বা কি?

 অতঃপর সুইট্‌জারল্যাণ্ড যাইবার সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্ব্বে আমাকে আমার আর্থিক সমস্যা ও আর্থিক সংস্থান সম্বন্ধেও বিবেচনা করিতে হইবে। পরিবারবর্গের সহিত, বিশেষভাবে পিতামাতার সহিত আলােচনা করিতে হইবে। কয়েক মাসের মধ্যেই বাঙ্গলার রাজনৈতিক অবস্থার পরিবর্ত্তন হইতে পারে এবং বাঙ্গলা সরকারের ধারণাও পরিবর্ত্তিত হইতে পারে। কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিবার পূর্ব্বে এ সমস্ত বিষয় ভাল করিয়া বিবেচনা করিয়া দেখিতে হইবে। যাহা হউক, এ বিষয়ে কোনরূপ বাধ্যবাধকতার মধ্যে না যাইয়া আমি স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিতে চাই, যদি সরকার আমার সুইজারল্যাণ্ডে বাস বাধ্যতামূলক বলিয়া মনে করেন তাহা হইলে আপনারা কোনরূপ ইতস্ততঃ না করিয়াই কথাবার্ত্তা চালান বন্ধ করুন। ঈশ্বর মহান্—অন্ততঃ তাঁহার সৃষ্ট পদার্থ অপেক্ষা মহান্—আমরা তাহাতে যখন বিশ্বাস স্থাপন করিয়াছি তখন আমাদের দুঃখ করিবার কারণ থাকিতে পারে না।

 আমার প্রতি অনুরক্ত ও সহানুভূতিসম্পন্ন অনেকের মনঃপীড়ার কারণ হওয়ায় আমি বড়ই দুঃখিত, কিন্তু এই মনে করিয়া আমি সান্ত্বনা লাভ করিতেছি যে, যাহারা একই মাতৃভূমির প্রতি আস্থা-

৩১৩