পাতা:পত্রাবলী (১৯১২-১৯৩২) - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৩৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

হইয়াছে। কলিকাতা ত্যাগের কয়েকদিন পূর্ব্বে উহা আমি প্রেরণ করিয়াছিলাম।

 আপনারা সকলে কারাগারে আবদ্ধ হইয়া থাকিবেন—আর আমি একা মুক্তির আলোকধারায় স্নাত হইব—ইহা ভাবাও আমার পক্ষে বেদনাদায়ক। ভাবিলে মন ভারাক্রান্ত হইয়া উঠে। বর্ত্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী এই অবস্থাকে সহজভাবে গ্রহণ করা আমার পক্ষে সহজসাধ্য নয়।

 কারাভ্যন্তরবাসী আমার কোন বন্ধুকে মুক্তি সম্বন্ধে আমি অন্ততঃ কোন আশা বা আশ্বাস দিতে চাই না, তাহার কারণ আমার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার আলোকে আমি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হইয়াছি যে, যতক্ষণ পরিপূর্ণরূপে কারাগার হইতে মুক্ত না হওয়া যায়—ততক্ষণ সে সম্বন্ধে কোন সুস্পষ্ট আশা পোষণ করা চলে না। এই ধারণায় আমি সাধারণভাবে এইটুকুমাত্র বলিতে পারি যে ভবিষ্যৎ আশাপ্রদ।

 আপনাদের কারাগারে থাকাকালীন আমি যদি জেলের বাইরে থাকি, সে হেন সময়ে যদি আপনাদের যে কোন একজনেরও আমার কোনরূপ সেবার প্রয়োজন হয় তাহা হইলে সে বিষয়ে আমাকে জানাইতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করিবেন না। আমার ক্ষমতার আয়ত্তে যে কোন কাজ আপনাদের জন্য সর্ব্বদা করিব জানিবেন।

 যদি কোন পুস্তক আমি ফেলিয়া আসিয়া থাকি এবং আপনারও যদি তাহার কাজ মিটিয়া গিয়া থাকে তাহা হইলে অনুগ্রহপূর্ব্বক আপনার সুবিধা অনুযায়ী বইটি এখানে পাঠাইয়া দিলে সুখী হইব; এখানে আমার পিতৃদেব ও মাতৃদেবী আছেন এবং আমাদের পরিবারের আরও কয়েকজন আছেন তাঁহাদের সকলেরই কুশল জানিবেন।

 কৃপাপূর্ব্বক এই পত্রখানি আমাদের সুহৃদবর্গের প্রত্যেককেই দেখাইবেন। কারণ আজ আমি আর কাহাকেও লিখিতেছি না, পত্রিকায় দেখিলাম সুরেনবাবু পুনর্ব্বার তাঁহার পুরাতন সহচর আমাশয়

৩১৮