পাতা:পত্রাবলী (১৯১২-১৯৩২) - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৩৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

যাঁহারা তাঁহাকে খুব ভাল রকম চিনবার ও বুঝবার অবসর পেয়েছিলেন—তাঁহাদেরই আজ দেশের কাজে সব চেয়ে বেশী অনাস্থা। ইহারই বা কারণ কি?

 দেশবন্ধুর দেহত্যাগের পর যাঁহারা কর্ত্ত্বব্য অবহেলা করেছেন তাঁহাদের মধ্যে আপনি সর্ব্বপ্রধান— কারণ তাঁহার দেহ চলে গেলেও আপনার মধ্যে তাঁহার আত্মা—তাঁহার অতৃপ্ত আশা-আকাঙ্ক্ষা বিরাজ করছে। সেই আত্মার প্রতীকস্বরূপ হ’য়েও, এবং আপনার এত প্রভাব থাকা সত্ত্বেও, আপনি কিছু করতে চান না। বড় দুঃখে একথা আমি বলছি—আমার ধৃষ্টতা মার্জ্জনা করবেন। আমি শেষ বারের মত হৃদয়ের বেদনা ও দুঃখ প্রকাশ করছি। আর আপনাকে বিরক্ত করব না।

 আমি মনে করেছিলাম এই মাসের শেষে অথবা নভেম্বরের গোড়ায় আপনার কাছে একবার যাব। এখন দেখছি যে গিয়ে কোনও লাভ নাই। নিজের পথ নিজেকেই খুঁজে নিতে হবে। যাহা নিজের ক্ষমতার বাইরে তার জন্য চেষ্টা করে লাভ নাই। বাঙ্গলা দেশের বড় দুর্ভাগ্য—তাহা না হ’লে এত অল্প সময়ের মধ্যে কংগ্রেসের এই দুরবস্থা ঘটত না।

 আর একটি কথা বলে আমি ক্ষান্ত হ’ব। জীবনে কাহারও কখনও খোসামুদি করি নাই—অপরের মন যুগিয়ে কথা বলার রীতি আমার জানা নাই। আমাদের Leader-এর জীবদ্দশায় যখন সকলেই তাঁহাকে সন্তুষ্ট করবার জন্য তাঁহার মনের মত কথা বলেছেন, আমি তখন অপ্রিয় সত্য বলে তাঁহার সহিত ঝগড়া করেছি। আপনাকে সন্তুষ্ট করবার জন্য কোনও কথা বলি নাই বা বলব না। দেশবাসী আপনাকে চায়—আপনার উপর তাহাদের অগাধ শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস আছে। সকল দল আপনাকে মানবে, আপনাকে খাতির করবে, আপনার কথা রাখবে। এ কথা সত্য বলে বিশ্বাস করি ব’লে আপনাকে জানিয়েছি। আপনাকে সন্তুষ্ট করবার জন্য অথবা

৩৫৭