পাতা:পত্রাবলী (১৯১২-১৯৩২) - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৪০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 এখানে এখনও গরম আছে। খাওয়াদাওয়ার অবস্থা পূর্ব্বেকার মত। পেটের অবস্থা ভাল না হইলে আহার বৃদ্ধির সম্ভাবনা নাই। এখানকার পানীয় জল মোটেই ভাল নয়।

 ৺পুরীধাম থেকে বাবার চিঠি পাইয়াছি—১২ তারিখের পত্র। আমি ১৬ই আগষ্টে বাবাকে পত্র দিয়াছি—আশা করি তাহা যথাসময়ে পৌঁছিয়াছে।

 অমির ২২শে তারিখের পত্র সি. আই. ডি. অফিসে আটক হইয়াছে। সঙ্গে গীতার যে পত্র ছিল তাহা কিন্তু পাইয়াছি। অমির পূর্ব্বেকার পত্র (৩রা তারিখের) অনেকাংশ কাটা এই অবস্থায় পাই।

 স্নেহের অমি, মীরা, নেড়ু ও গীতা—তোমাদের সকলের পত্র আমি পাইয়াছি। বোধ হয় মীরা ও নেড়ু একখানি পত্র লিখিবার পর ক্লান্ত হইয়া পড়িয়াছে।

 এখানকার জেল জব্বলপুরের চেয়ে আকারে ছোট—কিন্তু ঘরবাড়ীগুলি তদপেক্ষা ভাল। আমি দোতালায় থাকি। ঘরগুলি খুব ছোট—একজনের থাকার মত—ইংরাজীতে যাকে বলে “সেল”। তবে আমি সমস্ত দিনরাত বারান্দায় পড়িয়া থাকি। জন্তু-জানোয়ার এখানে আনিতে পারি নাই এবং স্থানাভাবের জন্য এখানে জোগাড় করি নাই। জব্বলপুরে যেমন একেবারে আলাদা yard পাইয়াছিলাম এখানে সেরকম নয়। কাজেই স্থানাভাব। এখানে রান্নার হাঙ্গামা নাই—কারণ আমি যা খাই তার জন্য রান্না করিতে হয় না। Stoveএর সাহায্যে খাওয়ার ব্যবস্থা হইয়া যায়। এখানে অধিকাংশ সময় লেখাপড়া করিয়া কাটে—তার জন্য কিছু বইও কিনিতে হইয়াছে।

 এখানে আসবার পর মেজদাদাকে যে চিঠি দিই—অনেকদিন পরে তার উত্তর পাইয়াছি। কয়েকদিন পূর্ব্বে তার প্রত্যুত্তরও দিয়াছি।

 এক জায়গায় বেশীদিন থাকিলে শেষটা বড় একঘেয়ে লাগে। তখন অন্য জায়গায় গেলে প্রথমটা একটু ভাল লাগে। তারপর

৩৭৬