পাতা:পত্রাবলী (১৯১২-১৯৩২) - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শ্রীশ্রীদুর্গা সহায়
রাঁচি
রবিবার

পরম পূজনীয়া
শ্রীমতী মাতাঠাকুরাণী
শ্রীচরণেষু—
মা,

 আপনার পত্র অনেকদিন হইল পাইয়াছি—তাহার উত্তরও লিখিয়াছিলাম কিন্তু পরে যখন পড়িয়া দেখি যে আবেশের ঘোরে অনেক বাজে কথা লিখিয়াছি—তখন আর পাঠাইবার ইচ্ছা হইল না—তাই ছিঁড়িয়া ফেলিলাম। আমার এক অভ্যাস পত্র লিখিতে বসিলে সংযম রাখি না—তাহাতে হৃদয় ঢালিয়া দিই। বিষয়কথাপূর্ণ পত্র আমার লিখিতে বা পড়িতে ভাল লাগে না—তাই আমার এইরূপ অভ্যাস—আমি চাই ভাবপূর্ণ পত্র। আমার পত্র লিখিবার ইচ্ছা না হইলে লিখি না আর যখন ইচ্ছা হয় তখন উপরি ২ অনেক পত্র লিখি!

 শারীরিক সুস্থতা জানান আমি অনেক সময়ে আবশ্যক মনে করি না—ভগবানের উপর বিশ্বাস করিয়া থাকিলে কোনও চিন্তা, উদ্বেগ বা ভয় আসে না। তার যদিও কাহারও অমঙ্গল ঘটে তাহাতেই বা আমরা কি করিতে পারি। আমাদের এমন কোনো শক্তি নাই যে ইচ্ছামত কাহাকেও আরোগ্য করিতে পারিব। তবে আর মিছে ভাবনা কেন? আমরা যাঁহার ক্রোড়ে আছি তিনিই ত আমাদের রক্ষয়িত্রী— যখন ত্রিলোকধারিণী বিশ্বজননী স্বয়ং আমাদের রক্ষয়িত্রী তখন এত চিন্তা এত ভয় কেন? অবিশ্বাসই দুঃখের এক সর্ব্বপ্রকার বিপদের কারণ কিন্তু মানুষ তাহা বুঝিতে চাহে না—এবং মনে করে যে ইচ্ছা করিলে কাহাকে ভাল করিয়া দিতে পারে, হায় রে মূর্খতা!

২৩