পাতা:পত্রাবলী (১৯১২-১৯৩২) - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৫
21-6-14

 বড় callous হইয়া গিয়াছি—বাস্তবিক এমন Stonehearted কেন হইলাম জানি না। আমি বাপ-মার জন্য মােটেই feel করি না—তাঁরা কাঁদিলেন আমি হাসিলাম কি করিব—এ সত্য কথা হৃদয়ে একটুও ভালবাসা নাই— থাকিত যদি তাহা হইলে তােমায় বাসিয়া ধন্য হইতাম।

 বাবার সঙ্গে আজ কথা হইল—তিনি ৩টা উপদেশ দিলেন—এবং বলিলেন মাথা সারিলে অন্যান্য কথা আলােচনা করিবেন। তাঁর চেষ্টা আমাকে সংসারধর্ম্মী করা—আমি আজ কিছু বলিলাম না— passive silence implying non-submission. পরে ইচ্ছা হয় তাঁকে পুনরায় আরও খুলিয়া বলিব। মাকে বােঝান যায় না— মা আমার উপর অসন্তুষ্ট—মনে করেন যে আমি তাঁকে তৃণ জ্ঞান করি।....

 সাধারণ মানুষ মাতৃস্নেহকে সর্ব্বাপেক্ষা গভীর ও স্বার্থহীন ভালবাসা বলিয়া মনে করে বলে “অতলস্পর্শ মাতৃস্নেহ পারাবার।” সােনা আমি কিন্তু মাতৃস্নেহকে অত উচ্চ স্থান দিই না—বেণীবাবু হয়ত জীবনে অন্য কোন প্রেমের সংস্পর্শে আসেন নাই তাই তাঁহার সেরূপ ধারণা। মাতৃস্নেহ কি বাস্তবিকই সম্পূর্ণ স্বার্থহীন? জানি না যাহা হউক মা যতক্ষণ পথের একটি বালকের সঙ্গে নিজ পুত্রের সমতা না করেন ততক্ষণ সে প্রেম কি স্বার্থহীন? নিজে পালন করিয়াছেন বলিয়া মমতা হয়।...

 আমি কিন্তু এ জীবনে যে প্রেমের আস্বাদ পাইয়াছি—আমি যে প্রেমসাগরে ভাসিতেছি—তাহার নিকট মাতৃস্নেহ গােষ্পদ সমান। এ স্বার্থপরতাময় জগতে মানুষে একমাত্র মাতৃস্নেহ খুঁজিয়া পায় তাই তারই ভূয়সী প্রশংসা করিয়া থাকে। নিজের পালিত জিনিষে সকলের ভালবাসা জন্মিতে পারে—তাতে বাহাদুরী কি? কিন্তু পথের

৪২