পাতা:পত্রাবলী (১৯১২-১৯৩২) - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 উক্ত সম্প্রদায়ের ভালমন্দ দুই পক্ষই আছে। ভালটা এখনকার কালেও বেশ ভাল চলিবে। কিন্তু মন্দটা বাস্তবিক মন্দ ছিল না— সে যুগের পক্ষে ভালই ছিল—তবে এ যুগের পক্ষে সুবিধাজনক হইবে না।

 কারণ কি? মানুষের “স্বাধীনতার” ধারণা পরিবর্ত্তিত হইয়াছে। প্রাচীনকালে ভারতবর্ষে স্বাধীনতা মানে লোকে বুঝিত—আধ্যাত্মিক স্বাধীনতা—সন্ন্যাস—কাম, লোভ ইত্যাদির হস্ত হইতে মুক্তি। কিন্তু এই স্বাধীনতার ভিতরে—রাজনৈতিক ও সামাজিক বন্ধন হইতে মুক্তি—এ স্বাধীনতাও ছিল। সন্ন্যাসী ইচ্ছা করিলে সামাজিক ও রাজনৈতিক নিয়ম অনায়াসে লঙ্ঘন করিতে পারিত—শাসনপ্রণালী পর্য্যন্ত পরিবর্ত্তন করিতে পারিত। পাশ্চাত্ত্য জগৎ কিন্তু রাজনৈতিক ও সামাজিক সমস্যা (problem) সমাধানে ব্যাপৃত রহিয়াছে। তাহাদের ভিতরে individualism-এর বিশেষ উন্নতি হইয়াছে। সমাজ ও শাসকমণ্ডলীর সহিত ব্যক্তির কি সম্বন্ধ হওয়া উচিত—সে বিষয়ে তাহারা মাথা ঘামাইতেছে।

 এই সংঘর্ষের ফলে adjustment of mutual rights-এর প্রয়োজন হইয়াছে। এখন আমরা দেখিতেছি, সমাজের ভিতরে বা State এর ভিতরে প্রত্যেকের কিছু কিছু right আছে—তাহার অপব্যবহার না করা বা অতিক্রম না করা পর্য্যন্ত সে স্বাধীন। সকলে বুঝিতেছে—তাহার মনুষ্যত্ব আছে—দাবী আছে voice আছে।

 আমরা এই democratic যুগে democratic প্রভাবের মধ্যে জন্মিয়াছি। সুতরাং ঐ স্থানে আঘাত করিলে এই যুগে কিছু করা সম্ভবপর নহে।

 কিন্তু individualism যে organisation-এর পক্ষে ক্ষতিকর? এর উপায় কি? আবার সামঞ্জস্য। উপায় আছে—ভয় নাই। জার্ম্মানি অনেকটা তাহার মীমাংসা করিতেছে। শান্তির সময়ে সকলে নিজ ২ স্বাধীনতা ভোগ করিতেছে—(সেখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ে

৫৪