পাতা:পথ ও পথের প্রান্তে - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

s R. * পত্রধারা ব্যক্তিগত প্রয়োজনের দাবিতে আমরা প্রতিদিন যে কাজ করে থাকি তার কোনো উদ্ধৃত্ত নেই, নিজের মধ্যেই তা শোষিত হয়ে নিঃশেষ হয়ে যায়। কিন্তু এমন একটি সাধনার সঙ্গে সন্তোষের সমস্ত জীবন সম্পূর্ণ সম্মিলিত হয়ে ছিল যে-সাধনা তার ব্যক্তিগত প্রয়োজনমগুলের অনেক অতীত। তার শ্রদ্ধাপ্রদীপ্ত জীবনের সেই পরিণতির ছবিটি আমি খুব স্পষ্ট দেখছি, যেহেতু তার জীবন স্বচ্ছ ও সরল ছিল—তার মধ্যে উপাদানের বহুলতা ছিল না। তার সংসার এবং তার সাধনা, তার কৰ্ম্ম এবং আদর্শ একত্র মিলিত ছিল, তার অল্পকালের আয়ুটুকু নিয়ে সে যে তারি মধ্যে জীবন যাপন করে যেতে পেরেছে এ তার সৌভাগ্য। আমি যদি প্রমাণের দ্বারা সন্তোষকে জানতুম তাহলে ভুল জানতুম—আমি তাকে সম্পূর্ণ দৃষ্টির দ্বারা জানি। ভালবাসার দ্বারা সব সময়েই যে দৃষ্টির বিকৃতি ঘটে তা নয়, দৃষ্টির সম্পূর্ণতাও ঘটে। আমার বুদ্ধি প্রমাণকে অস্বীকার করে না, কিন্তু দৃষ্টিশক্তি প্রত্যক্ষবোধকেও শ্রদ্ধা করে । তুইয়ের মধ্যে মাঝে মাঝে একান্ত বিরোধও ঘটে তখনি রহস্য বড়ো কঠিন ও বড়ো দুঃখকর হয়ে ওঠে। স্বয়ং মৃত্যুর মধ্যেই এই বিরোধ আছে—আমাদের হৃদয়ের সহজ বোধ তাকে চরম ব’লে মানতে চায় না—কিন্তু বিরুদ্ধ প্রমাণের আর অস্ত নেই—এই দুই প্রতিপক্ষের টানাটানিতেই তো এত দুঃসহ বেদন । আমার “যেতে নাহি দিব” কবিতাটি এই বেদনারই কবিতা । আজ জাহাজের মধ্যশ্রেণীর যাত্রীদের দরবার নিয়ে ।