পাতা:পথ ও পথের প্রান্তে - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পথে ও পথের প্রান্তে SS হয়, এও নিশ্চয় জানি যে, দেবলোকে আমাদের বাস নয়, যেখানেই থাকি না কেন । অনেকের অনেক ইচ্ছার ভিড় ঠেলে ঠেলে নিজের ইচ্ছার জন্য অতি সংকীর্ণ একটুখানি পথ পাওয়া যায়,—একটু সুবিধা এই যে, পথ সংকীর্ণ হোলেও সেটা অনেক কালের অভ্যস্ত পথ—ভিড়ের মধ্যেও খানিকট আপন-মনে চলা সম্ভব । আমাদের সহযাত্রীর মধ্যে একজন জমান নৃতত্ত্ববিদ সস্ত্রীক ভারতবর্ষে চলেছেন । তিনি আমাদের অধ্যাপকের নাম শুনেছেন। আমাকে বললেন—“শুনেছি তিনি ফিজিক্সের অধ্যাপনা করেন । তাহলে বোঝা যাচ্ছে তিনি নৃতত্ত্ববিদ্যার আঙ্কিক দিকটার চর্চা করেন ; আমরা এর মানবিক দিকটা নিয়ে আছি ।” মানবিক দিক বলতে যে কতখানি বোঝায় তা এর অধ্যবসায় দেখে একটু আন্দাজ করা যেতে পারে। দক্ষিণ ও মধ্যভারতের বন্যজাতিদের বিবরণ সংগ্ৰহ করতে চলেছেন, এ সব জাতদের বিষয় এখনো অজ্ঞাত ও ছজ্ঞেয়, আমি তো এদের নামও শুনিনি। এরা খুব দুর্গম জায়গায় প্রচ্ছন্নভাবে থাকে। ইনি তাদের সেই প্রচ্ছন্নতার মধ্যে প্রবেশ করতে চলেছেন। র্তাবুতে থাকলে পাছে তা’র ভয় পায় সন্দেহ ক’রে একটা থলি নিয়েছেন ; রাত্রে তারি মধ্যে থাকবেন। সাপ আছে, হিংস্র জন্তু আছে, অনিয়মে অপথ্যে ব্যাধির আশঙ্কা আছে। অর্থাৎ প্রাণ হাতে ক’রে নিয়ে চলেছেন। একটি শিশু সন্তানকে আত্মীয়ের হাতে । রেখে এসেছেন। পাছে অরণ্যে স্বামী অসুস্থ হয়ে পড়েন।