পাতা:পথ ও পথের প্রান্তে - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পথে ও পথের প্রাস্তুে ミ> b কাল সকালে কলম্বো পৌছব। যখন যুরোপে ঘুরে ঘুরে বেড়াচ্ছিলুম আজকের এই দিনের ছবি অনেকদিন মনে মনে একেছি জাহাজ এসেছে ভারতবর্ষের কাছাকাছি ; উজ্জ্বল আকাশ বুক বাড়িয়ে দিয়েছে ; শকুন্তলায়, বালক ভরত যেমন সিংহের কেশর ধরে খেলছে, শীতের নিমল রৌদ্র তেমনি তরঙ্গিত নীল সমুদ্রকে নিয়ে ছেলেমানুষি করছে, আর সেই নারকেল গাছের ঘন বন, যেন দূরে থেকে ডাঙার হাত-তোলা ডাক। সেই কল্পনার ছবি এখন সামনে এসেছে। কাল লাক্কাডাভের খুব কাছ ঘেঁষে জাহাজ এল—শু্যামল তটভূমির কণ্ঠস্বর যেন শুনতে পেলুম। ঐ তরুবেষ্টিত দিগন্তের ধারে মানুষের প্রতিদিনের জীবনযাত্রা চলছে এই কথাটা যেন নতুন ও নিবিড় বিস্ময়ের সঙ্গে আমার মনে লাগল। আমি জানি যারা ঐখানে মাটি আঁকড়ে আছে তারা নিজে এর আনন্দ, এর সৌন্দর্য, এর মহার্ঘত যে স্পষ্ট বুঝছে তা নয়। অভ্যাসে আমাদের চৈতন্যকে মান ক’রে দেয়, কিন্তু তবু যা সত্য তা সত্যই । দূরের থেকে শান্তিনিকেতন আমার কাছে যতখানি, কাছের থেকে ঠিক ততখানি না হোতেও পারে –কিন্তু তার থেকে কী প্রমাণ হয়। $ দৃষ্টিতে যে-সমগ্রতা আমরা এক ক’রে দেখতে পাই সেইটাই বড়ো দেখা, কাছের দৃষ্টিতে যে ।