পাতা:পথ ও পথের প্রান্তে - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\()ჯ) পত্রধারা ૨ જ মানুষ মাকড়ষারই মতো । সে নিজের অন্তর থেকেই হাজার হাজার সূক্ষ্ম সূত্র বের করে জাল বাধে, নিজের অব্যবহিত পরিবেশের সঙ্গে নিজের বিশেষ সম্বন্ধ ধ্রুব করতে চেষ্টা করে । যখন সেই বাসা বাধে, গ্রস্থি এমন পাকা করে আঁটতে থাকে যে ভুলে যায় যে বারে বারে এগুলো ছিন্ন করতে হবে। এই জন্যেই যখন দূরে যাত্র করবার সময় আসে তখন খোট। ওপড়ানো ও রসি টেনে ছেড়া এত কঠিন হয়ে ওঠে। মানুষ যখন বাড়ি তৈরি করে তখন নিজেকে মনে মনে আপন সুদূর ভাবি কালে বিস্তার করে দেয়—যে কালের মধ্যে তার নিজের স্থান নেই। তাই পয়লা নম্বরের ইট ও সেরা মার্কার দামী সিমেন্ট ফরমাশ করে— তার নিজের ইচ্ছের কঠিন স্ত পটাকে উত্তর কালের হাতে দিয়ে যায়, সেই কাল সেটার গ্রন্থি শিথিল করতে লেগে যায় নয় তো নিজের চলতি ইচ্ছের সঙ্গে সেই স্থাবর ইচ্ছেটার মিল করবার জন্ত নানাপ্রকার কসরৎ করতে থাকে। বস্তুত মানুষের বাস করা উচিত সেই র্তাবুতে যে তাবুর পত্তন মাটিকে প্রাণপণে আঁকড়ে ধরে না এবং পাথরের দেয়াল উচিয়ে মুক্ত আকাশকে মুষ্টিঘাত করতে থাকে না। আমাদের দেহটাই যে আলগা বাসা, আমাদের যাযাবর আত্মার উপযোগী, ত্যাগ করবার সময় এলে সেটাকে কাধে করে সঙ্গে নিয়ে যেতে হয় না। এই জন্তেই আমি তোমাকে অনেকবার পরামর্শ দিয়েছি ইটকাঠের বঁাধন