পাতা:পথ ও পথের প্রান্তে - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

-পথে ও পথের প্রান্তে ૪૧, দিয়ে অচল ডাঙার উপর বাড়ি তৈরি কোরো না—স্রোতের উপর সচল বাসার ব্যবস্থা করো—যখন স্থির থাকতে চাও একটা নোঙর নামিয়ে দিলেই চলবে—আবার যখন চলতে চাও তুখন নোঙরটাকে টেনে তোলা খুব বেশি কঠিন হবে না। আমাদের কালস্রোতে ভাসা জীবনের সঙ্গে বাসাগুলোর সামঞ্জস্য থাকে না ব'লেই টানা ছেড়ায় পদে পদে দুঃখ পেতে হয়। আমাদের বাসাগুলোর মধ্যে ছটো তত্ত্বই থাকা চাই স্থাবর এবং জঙ্গম । থাকবার বেলা থাকতে হবে ফেলবার বেলা ফেলতে হবে—আত্মার সঙ্গে দেহের সম্বন্ধের মতো । এ সম্বন্ধ সুন্দর কারণ এটা ধ্রুব নয়। সেইজন্য নিয়তই দেহের সঙ্গে দেহীর বোঝাপড়া করতে হয়। সাধনার অন্ত নেই ; এর বেদনা আর আনন্দ সমস্তই অধ্রুবতার স্রোত থেকেই আবতিত,—এর সৌন্দর্যও সকরুণ, তার উপরে মৃত্যুর ছায়। । কালের এবং ভাবের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গেই এর পরিবর্তন । সংসারে আমাদের সব বাসাই এমনি হওয়াই ভালো। আমার ধ্যান যে রূপকে আশ্রয় করেছে পরের হাতে নিজেকে বেচবার জন্য সে যেন সেজেগুজে লোভনীয় হয়ে না বসে থাকে। নিজেকে সম্পূর্ণ করে তার পরে অন্তকালের অন্য লোকের তপস্যাকে ইচ্ছাকে সম্পূর্ণ পথ ছেড়ে দিয়ে যেন একেবারেই সরে দাড়ায়। নইলে কালের পথ রোধ করতে চেষ্টা করলে তার দুর্গতি ঘটতে বাধ্য। টাকার জোরে আমরা জামাদের ধ্যানের রূপটাকে বেঁধে দিয়ে যেতে ইচ্ছে করি।