পাতা:পথ ও পথের প্রান্তে - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

»२ পত্রধারা মধ্যেই ব্যথার রূপ দেখা গেল—কেননা সেখানে কেবলি প্রতীক্ষা । এর মধ্যে একটা স্বতোবিরুদ্ধ তত্ত্ব দেখতে পাই । অপূর্ণ যাত্রা করে চলেছে পূর্ণের অভিমুখে—চলেছে ব’লেই তার বিচ্ছেদ নব নব পর্যায়ে গভীর একটা আনন্দ পায়— কিন্তু যে পরিপূর্ণ সে তো চলে না, সে চির যুগ প্রতীক্ষা করে থাকে—তার নিত্য পুষ্প, নিত্য দীপালোক, কিন্তু সে নিত্যই একা, সেই হচ্ছে যথার্থ বিরহী। সুর-বাধার মধ্যেও বীণায় সংগীতের উপলব্ধি পর্বে পর্বে শুরু হয়েছে, কিন্তু অগীত সংগীত অসীম অব্যক্তির মধ্যে অপেক্ষা করেই আছে। যে অভিসারিকা তারই জিৎ, কেননা আনন্দে সে কাটা মাড়িয়ে চলে । কিন্তু বৈষ্ণব এইখানে আমাকে থামিয়ে দিয়ে বলবে র্যার জন্তে অভিসার তিনিও থেমে নেই, সমস্তক্ষণ বঁাশি বাজাচ্ছেন, প্রতীক্ষার বাশি—তাই অভিসারিণীর চলা আর বাঞ্ছিতের আহবান পদে পদেই মিলে যাচ্ছে-—তাই নদী চলেছে যাত্রার সুরে, সমুদ্র তুলছে আহবানের ছন্দে–বিশ্বজোড়া বিচ্ছেদের আসর মিলনের গানে জমজমাট হয়ে উঠেছে,—অথচ পূর্ণ অপুর্ণের সে মিলন কোনো দিন বাস্তবের মধ্যে ঘটছে না, সে আছে ভাবের মধ্যে । বাস্তবের মধ্যে ঘটলে সৃষ্টি থাকত না—কেননা স্মৃষ্টির মর্মকথাই হচ্ছে চির অভিসার চির প্রতীক্ষার দ্বন্দ্ব। এভোলুশুন বলতে তাই বোঝায়। যাকগে, আমার বলবার কথা ছিল, বাদলার দিন মেঘদূতের দিন নয়— এ যে অচলতার দিন—মেঘ চলছে না, হাওয়া চলছে না, বৃষ্টি-যে চলছে তা মনে হয় না, ঘোমটার মতো দিনের মুখ