পাতা:পদাবলী-মাধুর্য্য.djvu/১০৪

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৯৮
পদাবলী-মাধুর্য্য

জড়িত ভাষায় ব্যক্ত হইয়াছে, যে—জড়বাদীরা ইহার মর্ম্ম তেমন বুঝিবেন না, যেরূপ ভাবপ্রবণ প্রেমিক বুঝিবেন।

‘‘মন্দির বাহিরে কঠিন কপাট,
চলইতে শঙ্কিত পঙ্কিল বাট,
তাহে অতি দূরতর বাদল-দোল,
বাকি কি বারই নীল নিচোল।
সুন্দরি কৈছে করবি অভিসার।
হরি রহু মানস সুরধনীপার।
ঘন ঘন ঝন্ ঝন্ বজর-নিপাত,
শুনইতে শ্রবণে, মরমে মরি জাত।
দশদিশ দামিনী দহই বিথার,
শুনইতে উচকই লোচন-তার।
ইথে যদি সুন্দরি তেজবি গেহ,
প্রেমক লাগি উপেথবি দেহ।
গোবিন্দ দাস কহে ইথে বিচার,
ছুটল বাণ কিয়ে যতনে নিঘার।’’

 সংসার টিটকারী দিতেছে—শত হস্ত বাড়াইয়া রাধাকে নিরস্ত করিতে চাহিতেছে। তুমি হরির সন্ধানে কোথায় যাইবে—ইহা দুরাশা; তিনি মানস-গঙ্গার ও-পারে আছেন (মনোনবদ্বারনিষিদ্ধ-বৃত্তি আত্মসমাহিত যোগী শুধু যাঁহাকে পান)—তাঁহাকে পাইব বলিলেই কি পাওয়া হয়? এই ঘন ঘন বজ্রপাত, বিদ্যুতের চকিত আলোকে চক্ষের তারা ঝলসিয়া যাইতেছে। তুমি কি প্রেমের জন্য দেহকে এমন করিয়া উপেক্ষা করিবে?

 গোবিন্দদাস বলিতেছেন, এখন কি আর এ বিষয়ে বিচারের অবকাশ আছে? বাণ হস্তচ্যূত হইয়াছে, এখন আর শত চেষ্টায়ও তাহার গতি ফিরান যাইবে না।