পাতা:পদাবলী-মাধুর্য্য.djvu/১২৬

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১২০
পদাবলী-মাধুর্য্য

 এই গানটি সর্ব্বত্রই কবি-বল্লভের ভণিতায় পাওয়া যায়। কোন কোন স্থানে নাকি অন্য গানে বিদ্যাপতির কবি-বল্লভ উপাধি পাওয়া গিয়াছে—–যাহা হউক তাহাতে সন্দেহের কারণ আছে। বিচারপতি সারদাচরণ যখন বিদ্যাপতির সংস্করণ প্রকাশ করেন, তখন তিনি এই সূত্রে “কবিবল্লভ” অর্থে বিদ্যাপতি বুঝিয়াছিলেন; অক্ষয় সরকার মহাশয় নির্ব্বিচারে সারদাচরণকেই অবলম্বন করিয়া পদটি বিদ্যাপতির খাতায় লিখিয়াছিলেন। কিন্তু বিদ্যাপতির যদিই বা “কবিবল্লভ” উপাধি থাকিয়া থাকে, তবে, যাহার উপাধি “কবিবল্লভ” তিনিই যে বিদ্যাপতি হইবেন—তাহা নহে। তারপর “বিদ্যাসাগর” বলিতে যেরূপ ঈশ্বরচন্দ্রকেই বুঝায়, “কবিবল্লভ” উপাধি সম্বন্ধে বিদ্যাপতির সেরূপ কোন যোগরূঢ়ত্ব হয় নাই। যদিই বা স্বীকার করা যায় যে, বিদ্যাপতির “কবিবল্লভ” উপাধি ছিল, তাহার এই উপাধি জনসমাজে কতকটা অবিদিত ছিল। বরঞ্চ “নব জয়দেব”, “কবিরঞ্জন”—এই দুটিই ছিল তাঁহার উল্লেখযোগ্য উপাধি।

 ‘বিদ্যাসাগর’ উপাধিতে ঈশ্বরচন্দ্র বুঝাইলেও, উহাতে তাঁহার একচেটিয়া সত্ব জন্মিয়াছে, একথা স্বীকার করা যায় না। বঙ্গের কয়েক জন বিশিষ্ট লোক ঈশ্বরচন্দ্রের সময়েই “বিদ্যাসাগর” উপাধি গ্রহণ করিয়াছিলেন এবং তাঁহাদের ক্ষুদ্র পরিবেষ্টনীয় মধ্যে ‘বিদ্যাসাগর’ বলিলে তাঁহাদিগকে বুঝাইত, যথা ঢাকার কালীপ্রসন্ন ঘোষ এবং বিবিধ সংস্কৃত গ্রন্থের টীকাকার ও সম্পাদক জীবানন্দ। এদেশে পল্লী খুঁজিলে আরও বিদ্যাসাগর মিলিতে পারে, সুতরাং “কবিবল্লভ” বলিতে যে শুধু বিদ্যাপতিকেই বুঝাইবে, এ-কথা একেবারেই বলা চলে না। ‘কবিবল্লভ’ উপাধি বিদ্যাপতির আদৌ ছিল কিনা—তাহারই নিশ্চয়তা নাই। এই উপাধিটি বাঙালা দেশেরই উপাধি বলিয়া মনে হয়, মিথিলায়