পাতা:পদাবলী-মাধুর্য্য.djvu/১৩৬

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১৩০
পদাবলী-মাধুর্য্য

 আর একবার গোপী কৃষ্ণকে পরিহাস করিয়াছিল, তাহা বড় কষ্টে। ডাক্তার আসিয়া মুমূর্ষ রোগীকে দেখিয়া যেরূপ মনের অবিশ্বাস ঢাকিয়া একটু হাসে, এই পরিহাস-রস সেই হাসির পর্য্যায়ে। চন্দ্রা কৃষ্ণকে আনিতে মথুরায় গিয়াছে। কৃষ্ণ বৃন্দাবনের কথা জিজ্ঞাসা করিতেছেন। দূতী তখন যে-সকল ব্যঙ্গোক্তি করিয়াছিল, তাহা মর্ম্ম-বেদনায় ভরপুর, হাসির ছদ্মবেশে মর্ম্মান্ত দুঃখের অশ্রু। রাধার কথা বলিতে যাইয়া গোপী বলিতেছে—

‘‘যে গেছে—তার সবই গেছে, কুল গেছে—মান গেছে,
রূপ গেছে, লাবণ্য গেছে, প্রাণ যেতে বসেছে।
তায় তোমায় কি ব’য়ে গেছে, আরও বিষয় বেড়েছে।
পাঁচ পদে যে ব্যাপার করে, এক পদে যদি সে হারে,
হানি কি সে জানতে পারে?’’
‘‘দেখে আমার ব্রজের কথা মনে পড়েছে আজ,
সে কথা শুনাই তোমা বল রস রাজ!”
“ছিল ধেনু গোপের পাড়া—
এথা কত হাতী-ঘোড়া;
সেখানে পরিতে ধড়া,
এথা কত জামা জোড়া,
রাই-পদে লুটান-মাথায় পাগড়ী পড়েছে তেড়া।
ছিলে নন্দের ধেনুর রাখাল,
তারপরে রাই রাজার কোটাল,
একা এসে হয়েছে ভূপাল।”

 এই সকল তীব্র-মর্ম্মবেদনার শ্লেষ। কিন্তু চন্দ্রা শেষে কৃষ্ণ-পরিত্যক্ত বৃন্দাবনের যে চিত্র উদ্ঘাটিত করিল, তাহা মর্ম্মান্তিক—

‘‘তুয়া সে রহলি মধুপুর,
ব্রজকুল আকুল—কলরব দুকুল—
কানু কানু করি ঝুর