পাতা:পদাবলী-মাধুর্য্য.djvu/৪০

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৩৪
পদাবলী-মাধুর্য্য

(“বিরতি আহারে, রাঙ্গা বাস পরে”), তখন আমরা সত্যই সেই পারমার্থিক ইঙ্গিত বুঝিয়াছি। এই উপলক্ষে কবি আরও স্পষ্ট করিয়া বলিয়াছেন “যেমন যোগিনী পারা।” রাধার ভাব-বিহ্বলতা বাড়িয়া যাইতেছে, তিনি জপ ছাড়িতে পারিতেছেন না, নাম—“বদন ছাড়িতে নাহি পারে”। কোন কোন স্থানে রাধিকা মন্দিরের পুরোহিতের ন্যায় মন্ত্রপাঠ করিতেছেন,—

“অখিলের নাথ,  তুমি হে কালিয়া,
যোগীর আরাধ্য ধন,
গোপ-গোয়ালিনী,  হাম অতি দীনা
না জানি ভজন পূজন।”
“বঁধু কি আর বলিব আমি  আমার জীবনে মরণে
জনমে জনমে প্রাণ-বঁধূ হইও তুমি,
তোমার চরণে,    আমার পরাণে
বাঁধিল প্রেমের ফাঁসি
সব সমাপিয়া,    এক মন হৈয়া
নিশ্চয় হইলাম দাসী” (চ)

 এই গানটি কিছু কিছু পরিবর্ত্তন করিয়া ব্রাহ্মগণ তাঁহাদের ধর্ম্মসঙ্গীতগুলির মধ্যে স্থান দিয়াছেন। [‘বঁধুর’ স্থানে ‘প্রভো’, “জনমে-জনমে”র স্থলে “জীবনে জীবনে”, “ফাঁসি”র স্থলে “ফাঁস”, সুতরাং দাসীর স্থলে ‘দাস’] এই গানটি সম্বন্ধে পরে আরও কিছু লিখিব। এরূপ অনেক পদ আলোচনা করিলে দেখা যাইবে, চণ্ডীদাসের মূল সুর কোথায়? তিনি জগতের ভিতর দিয়া জগদীশ্বরকে দেখিয়াছিলেন,—তিনি কোন মন্দিরে তাঁহার সাক্ষাৎলাভ করিয়া লিখিয়াছেন,—

“ব্রহ্মাণ্ড ব্যাপিয়া আছয়ে যে জন,
   কেহ না জানয়ে তারে,
প্রেমের আরতি যে জন জানয়ে,
   সেই সে চিনিতে পারে।” (চ)

এই প্রেম-তীর্থের পথিকরে আমাদের এত ভাল লাগে এইজন্য যে, বিষ্ণুশর্ম্মা যেরূপ গল্প শুনাইতে যাইয়া রাজকুমারদিগকে নীতি-শিক্ষা