পাতা:পরশুরাম গ্রন্থাবলী ( তৃতীয় খণ্ড ) - রাজশেখর বসু.pdf/১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

________________

লপটে ঝপটে দপটে রবটে ঝড় বহে খরতর। লপ লপ লক্ষে ঝপ ঝপ ঝক্ষে দিল্লি কাঁপে থরথর ॥... তাথই তাথই হাে হাে হই হই ভৈরব ভৈরবী নাচে। | অট্ট অট্ট হাসে কট মট ভাষে মত্ত পিশাচী পিশাচে। অবশেষে বেগতিক দেখে বাদশা ভবানন্দের শরণাপন্ন হলেন, বিস্তর ধন-দৌলত, খেলাত আর রাজগির ফরমান দিয়ে তাঁকে খুশী করলেন, তখন ভুতের উৎপাত থামল। সেকালের তুলনায় আজকাল ভূত প্রেত কিঞ্চিৎ দুর্লভ হয়েছে বটে, কিন্তু এই দিল্লিতে এখনও ভূত দেখা যায়। | কপিল গত বললেন, মখজ্যেমশাই, আপনি তাে প্রাচীন লোেক, বহুকাল দিল্লিতে আছেন, ভূতের সঙ্গে কখনও আপনার মােলকাত হয়েছিল ? রামতারণ বললেন, আমি নিষ্ঠাবান ব্রাহ্মণ, তােমাদের মতন অখাদ্য খাই না, নিত্য সন্ধ্যা-আহিক করি। ভূতের সাধ্য নেই যে আমার কাছে ঘেষে। কপিল গুপ্ত বললেন, আচ্ছা জটাধরবাব, আপনাকে তাে একজন চৌকস লােক বলে মনে হচ্ছে, আপনি ভূত দেখেছেন ? জটাধর বললেন, নিরন্তর দেখছি, ভূত দেখা অতি সহজ।। -বলেন কি! দয়া করে আমাদের দেখান না। রামতারণ বললেন, ওসব বুজরুকি আমার কাছে চলবে না। ভূত প্রেত মানি বটে, একলা অন্ধকারে ভয়ও পাই, কিন্তু জটাধর কি ঘটাধর বাব, ভূত দেখাতে পারেন এ কথা বিশ্বাস করি না। কলেজে আমি রীতিমত সায়েন্স পড়েছি, ম্যাজিকওয়ালাদের জোচ্চুরিও আমার জানা আছে। অট্টহাস্য করে জটাধর বললেন, যদি আপনাকে ভূত দেখাই ? —দেখাবেন বললেই হল! কবে দেখাবেন ? কোথায় দেখাবেন ? কখন দেখাবেন ? —আজই, এখানেই, এখনই দেখাতে পারি। কপিল গপ্ত বললেন, দেখিয়ে ফেলুন মশাই, আর দেরি করবেন না, আমাদের বাড়ি ফেরবার সময় হল। কিন্তু কি দেখাবেন, ভূত না প্রেত ? | রামতারণবাব, প্রতিবাদ সইতে পারেন না। চটে গিয়ে বললেন, বেশ, এখনই দেখান, ভূত প্রেত বেম্মদত্যি শাঁখচন্নী যা পারেন। আমি বাজি রাখছি যে আপনি পারবেন না, শুধু ধাপা দিচ্ছেন। ভূত দেখানাে আপনার সাধ্য নয়। | জটাধর বললেন, আপনার চ্যালেঞ্জ মেনে নিলম। মােটা টাকা বাজি রাখতে চাই না, কারণ আপনি নিশ্চয় হারবেন। ছা-পােষা পেনশনভােগী বুড়াে মানুষ, আপনার ক্ষতি করবার ইচ্ছে নেই। এই বাজি রাখা যাক যে ভূত যদি দেখাতে পারি তবে আমার চা চরট পানের দাম আপনি দেবেন। আর যদি হেরে যাই তবে আপনি যা খেয়েছেন তার দাম আমি দেব। রাজী আছেন ? আপনারা সবাই কি বলেন ? সবাই বললেন, খুব ভাল প্রস্তাব, ভেরি ফেয়ার অ্যান্ড জেন্টলম্যানলি। | বর্মা চটের উগ্র ধোঁয়া উদগিরণ করতে করতে জটাধর বকশী বলতে লাগলেন।উনিশ শ একচল্লিশ সালের কথা। তখন আমি বর্মায়, জেনারেল সিটওয়েলের :