পাতা:পরিণীতা - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

yx2 offoots শেখরের ভাব দেখিয়া ললিতার থিয়েটার দেখিবার সাধ লোপ পাইল, কিন্তু তাহার না গেলেও যে নয় । কথা হইয়াছিল, সে অৰ্দ্ধেক খরচ দিবে এবং চারুর মামা অৰ্দ্ধেক দিবে। চারুদের ওখানে সকলেই তাহার জন্য অধীর হইয়া অপেক্ষা করিতেছে এবং যত বিলম্ব হইতেছে, তাহদের অধৈৰ্য্যও তত বাড়িতেছে, ইহা সে চোখের উপর দেখিতে লাগিল, কিন্তু উপায়ও খুজিয়া পাইল না। অনুমতি না পাইয়া যাইবে-এত সাহস তাহার ছিল না। আবার মিনিট দুই তিন নিঃশব্দে থাকিয়া বলিল, শুধু আজকের দিনটি-যাব ? শেখর বইটা একপাশে ফেলিয়া দিয়া ধমকাইয়া উঠিল, বিরক্ত কোরো না ললিতা, যেতে ইচ্ছে হয় যাও, ভাল-মন্দ বোঝবার তোমার যথেষ্ট বয়স হয়েচে । ললিত চমকাইয়া উঠিল। শেখরের কাছে বকুনি খাওয়া তাহার নূতন নহে; অভ্যাস ছিল বটে, কিন্তু দু-তিন বৎসরের মধ্যে এরকমটি। শুনে নাই। ওদিকে বন্ধুরা অপেক্ষা করিয়া আছে, সেও কাপড় পরিয়া প্ৰস্তুত হইয়াছে, ইতিমধ্যে টাকা আনিতে আসিয়া এই বিপত্তি ঘটিয়াছে। এখন তাহদের কাছেই বা সে কি বলিবে ? কোথাও যাওয়া-আসা সম্বন্ধে আজ পৰ্য্যন্ত তাহার শেখরের তরফ হইতে অবাধ স্বাধীনতা ছিল, সেই জোরেই সে একেবারে কাপড় পরিয়া সাজিয়া আসিয়াছিল, এখন শুধু যে সেই স্বাধীনতাই এমন রূঢ়ভাবে খর্ব হইয়া গেল, তাহা নহে, যেজন্য হইল, সে কারণটা যে কতবড় লজ্জার, তাহাই আজ তাহার তেরো বছর বয়সে প্রথম উপলব্ধি করিয়া সে মরমে মরিয়া যাইতে লাগিল । অভিমানে চােখ অশ্রুপূৰ্ণ করিয়া সে আরো মিনিট পাঁচেক নিঃশব্দে দাড়াইয়া থাকিয়া চােখ মুছিতে মুছিতে চলিয়া গেল। নিজের ঘরে গিয়া বিকে