পাতা:পরিণীতা - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

3t পৰিণীত তঁহার কথা শুনিয়া মনোরমা বিশেষ সন্তুষ্ট হইলেন না । ইহাতে তঁহার নিজের ক্ষতিবৃদ্ধি কিছুই নাই বটে, তথাপি এত টাকা। একজন আর একজনকে দিতেছে দেখিলে অনেক স্ত্রীলোকই প্ৰসন্নচিত্তে গ্ৰহণ করিতে পারে না । চারু এতক্ষণ চুপ করিয়া শুনিতেছিল, সে মহাখুশী হইয়া লাফাইয়া উঠিল, বলিল, তাই দাও মামা, আমি সই-মাকে বলে আসাঁচি । তাহার মা ধমক দিয়া বলিলেন, তুই থাম চারু, ছেলেমানুষ, এসব কথায় থাকিসনে। বলতে হয়, আমিই বলব। গিরীন কহিল, তাই ব’লৈ দিদি । পরশু রাস্তার উপর দাড়িয়েই গুরুচরণবাবুর সঙ্গে একটুখানি আলাপ হয়েছিল, কথাবাৰ্ত্তায় মনে হ’ল-বেশ সরল লোক ; তুমি কি বল ? মনোরমা বললেন, আমিও তাই বলি, সবাই তাই বলে । ওঁরা স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই বড় সাদাসিদে মানুষ । সেইজন্যই ত দুঃখ হয় গিরীন, আমন লোকটিকে হয়ত বাড়ী-ঘর ছেড়ে নিরাশ্রয় হ’তে হবে। তার সাক্ষী দেখলিনে গিরীন, শেখরবাবু ডাকিচেন বলতেই ললিতা কি রকম তাড়াতাড়ি উঠে পালালো ; বাড়ীশুদ্ধ লোক ওদের কাছে যেন বিক্ৰী হয়ে আছে। কিন্তু যত খোসামােদই করুক না কেন, নবীন রায়ের হাতে গিয়ে একবার যখন পড়েচে, রেহাই পাবে, এ ভরসা কেউ করে না। গিরীন জিজ্ঞাসা করিল, তা হ’লে বলবে ত দিদি ? আচ্ছা, জিজ্ঞেস করব। দিয়ে যদি তুই উপকার করতে পারিস, ভালই তা। বলিয়াই একটুখানি হাসিয়া বলিলেন, আচ্ছা, তোরই বা এত চাড় কেন গিরীন ? চাড় আর কি দিদি, দুঃখে-কষ্টে পরস্পরের সাহায্য করতেই হয়,