পাতা:পরিণীতা - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

፵ግ পরিণীত। হঁহা, বলিয়া শেখর ক্ষণকাল স্থির হইয়া থাকিয়া কহিল, কাল সকালের গাড়ীতেই আমি মাকে নিয়ে পশ্চিমে যাচ্ছি, এবার ফিরতে হয়ত দেৱী হবে। এই চাবি নাও, তোমার খরচের টাকা-কড়ি ওই দেরাজের মধ্যেই রইল । প্ৰতিবার ললিতাও সঙ্গে যায়। গতবার এই উপলক্ষে সে কি আনন্দে জিনিষপত্ৰ গুছাইয়া লইয়াছিল, এবার সে কাজটা শেখর-দা { একা করিতেছে, খোলা তোরঙ্গের দিকে চাহিবামাত্ৰই ললিতার তাহা মনে পড়িল । W শেখর তাহার দিক হইতে মুখ ফিরাইয়া লইয়া, একবার কাসিয়া গলাটা পরিষ্কার করিয়া বলিল, সাবধানে থেকে ; আর যদি কোনকিছুর বিশেষ আবশ্যক হয়, দাদার কাছে ঠিকানা জেনে নিয়ে আমাকে চিঠি লিখো । অতঃপর দুইজনেই চুপ করিয়া রহিল। এবার ললিতা সঙ্গে যাইবে না, শেখর তাহা জানিতে পারিয়াছে, এবং তাহার কারণটাও হয়ত শুনিয়াছে মনে করিয়া ললিতা লজ্জায় সঙ্কুচিত হইতে লাগিল। হঠাৎ শেখর কহিল, আচ্ছা, যাও এখন, আমাকে আধার। এই-- গুলো গুছিয়ে নিতে হবে । বেলা হ’ল, আজ একবার আফিসেও যেতে হবে । ললিতা খোলা তেরঙ্গের সুমুখে হাঁটু গাড়িয়া বসিয়া বলিল, তুমি স্নান করগে, আমি গুছিয়ে দিচ্ছি। তা হ’লে তা ভালই হয়, বলিয়া শেখর চাবির গোছাটা ললিতার কাছে ফেলিয়া দিয়া, ঘরের বাহিরে আসিয়া সহসা থমকিয়া দাড়াইল, বিলিল, আমার কি দরকার হয়, তা ভুলে যাওনি ত? ললিতা মাথা বুকাইয়া তেরঙ্গের জিমিষপত্র পরীক্ষা করিতে লাগিল, সে কথার জবাব দিল না ।