পাতা:পরিণীতা - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরিণীত So জ্ঞান বুদ্ধি হয়েছে তা। বলিয়া সহসা একটা ক্ষুদ্র নিঃশ্বাস ত্যাগ করিয়া কহিলেন, মা আমার একাধারে যেন লক্ষ্মী-সরস্বতী ! এমন মেয়ে বহুভাগ্যে মেলে, শেখরনাথ। কথাটা উচ্চারণ করিতেই তঁহার শীর্ণ কৃশ মুখের উপর গভীর স্নেহের এমন একটা স্নিগ্ধ-মধুৰ ছায়াপাত হইল যে, গিরীন ও শেখর উভয়েই আন্তরিক শ্রদ্ধার সহিত তাহাকে মনে মনে নমস্কার না করিয়া থাকিতে পারিল না । ऊ চায়ের মজলিস হইতে নিঃশব্দে পলাইয়া আসিয়া ললিতা শেখরের ঘরে ঢুকিয়া, উজ্জল গ্যাসের নীচে একটা তোরঙ্গ টানিয়া আনিয়া শেখরের গরম বস্ত্রগুলি পাট করিয়া গুছাইয়া রাখিতেছিল, শেখরকে প্ৰবেশ করিতে দেখিয়া, মুখ তুলিয়া তাহার মুখের পানে চাহিয়া সে ভয়ে বিস্ময়ে নির্বাক হইয়া রহিল । মোকদ্দমায় সর্বস্ব হারিয়া মানুষ যে রকম মুখ করিয়া আদালত হইতে বাহির হইয়া আসে, এ-বেলার মানুষকে যেন ও-বেলায় সহসা আর চিনিতে পারা যায় না, এই এক ঘণ্টার মধ্যে তেমনি শেখরকে ললিত যেন ঠিক চিনিতেই পারিল না। তােহর মুখের উপর সর্বস্ব হারানোর সমস্ত চিহ্ন যেন জ্বলন্ত লোহা দিয়া পোড়াইয়া কে ছাপিয়া দিয়াছে। শেখর শুষ্ককণ্ঠে জিজ্ঞাসা করিল, কি হচ্ছে ললিতা ? ললিতা সে প্রশ্নের জবাব না দিয়া কাছে সরিয়া আসিয়া দুই হাতে তাহার একটি হাত লইয়া কঁাদ-কঁাদ হইয়া বলিল, কি হয়েছে, (冲寸颈-而1? কৈ, কিছুই হয়নি ত, বলিয়া শেখর জোর করিয়া একটু হাসিল।