পাতা:পরিণীতা - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8ቆዕ শেখর টেবিলের দিকে মুখ ফিরাইয়া মালাটা তুলিয়া লইয়া বলিল, নিয়ে যাও । তুমি ঐখান থেকে ছুড়ে দাও । শেখর ঘাড় নাড়িয়া বলিল, কাছে না এলে পাবে না । তবে আমার কােজ নেই, বলিয়া ললিতা রাগ করিয়া চলিয়া ¢é | শেখর চোচাইয়া বলিল, কিন্তু অৰ্দ্ধেকটা হয়ে থাকলে থাকে থাক, বলিয়া ললিতা যথাৰ্থ-ই রাগ করিয়া চলিয়া গেল। সে চলিয়া গেল বটে, কিন্তু নীচে গেল না। পূর্বদিকের খোলা ছাদের একান্তে গিয়া রেলিঙ ধরিয়া চুপ করিয়া দাড়াইল। তখন সম্মুখের আকাশে চাদ উঠিয়াছিল এবং শীতের পাণ্ডুর জ্যোৎস্নায় চারিদিক ভাসিয়া যাইতেছিল । উপরে স্বচ্ছ নিৰ্ম্মল নীলাকাশ । সে একবার শেখরের ঘরের দিকে দৃষ্টিনিক্ষেপ করিয়া উৰ্দ্ধমুখে চাহিয়া রহিল। এইবার তাহার চোখ জ্বালা করিয়া, লজ্জায় অভিমানে দুই চোখ জলে ভরিয়া গেল । সে এত ছোট নহে যে, এ সব কথার তাৎপৰ্য্য সম্পূর্ণ হৃদয়ঙ্গম করিতে পারে না, তবে কেন তাহাকে এমন মৰ্ম্মান্তিক উপহাস করা ! সে যে কত তুচ্ছ, কত নীচ, এ কথা বুঝিবার তাহার যথেষ্ট বয়স হইয়াছে। সে ঠিক জানে, সে অনাথ এবং নিরুপায় বলিয়া তাহাকে সবাই আদর ও যত্ন করে-শেখর করে, তাহার জননীও করেন। তাহার আপনার বলিতে কেহ নাই, সত্যকার দায়িত্ব তাহার কাহারও উপর নির্ভর করে না বলিয়াই, গিরীন সম্পূর্ণ পর হইয়াও তাঁহাকে উদ্ধার করিয়া দিবার কথা তুলিতে পারিয়াছেন। ললিতা চোেখ মুদিয়া মনে মনে বলিল, এই কলিকাতার সমাজে তাহার মামার অবস্থা ত শেখরদের কত নীচে, সে আবার সেই মামার আশ্ৰিত, গলগ্ৰহ। ওদিকে সমান ঘরে শেখরের বিবাহের