পাতা:পরিণীতা - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

pf's . মুখ ফিরিয়া শুইয়াছিলেন, শেখরের পুনরাগমন জানিতে পারিলেন a খানিকক্ষণ চুপ করিয়া বসিয়া থাকিয়া শেখর যখন উঠিয়া গেল, তখনও ললিতা ও গিরীন তেমনি চুপিচুপি কথাবাৰ্ত্ত কহিতেছিল, তাহাকে কেহ বসিতে বলিল না, আসিতে বলিল না, একটা কথা পৰ্য্যন্ত কেহ ডাকিয়া জিজ্ঞাসা করিল না । আজ সে নিশ্চয় বুঝিয়া আসিল, ললিতা তাহাকে তাহার কঠিন দায় হইতে চিরদিনের মত মুক্তি দিয়াছে-এখন সে নিৰ্ভয়ে হঁফি ফেলিয়া বঁচুক-আর শঙ্কা নাই, আর ললিতা তাহাকে জড়াইবে না। ঘরে আসিয়া কাপড় ছাড়িতে ছাড়িতে সহস্রাবার মনে পড়িল, আজ সে নিজের চোখে দেখিয়া আসিয়াছে, গিরীনই ও-বাড়ীর পরম বন্ধু, সকলের আশা-ভরসা এবং ললিতার ভবিষ্যতের আশ্রয়। সে কেহ নহে, এমন বিপদের দিনেও ললিতা তাহার একটা মুখের পরামর্শরও আর প্রত্যাশী নহে । সে সহসা 'উঃ'-বলিয়া একটা গদি-আঁটা আরাম-চৌকীর উপর ঘাড় গুজিয়া বসিয়া পড়িল। ললিতা তাহাকে দেখিয়া মাথায় কাপড়টা টানিয়া দিয়া মুখ ফিরাইয়া লইয়াছিল, যেন সম্পূৰ্ণ পর-একেবারে অপরিচিত। আবার তাহারই চােখের সুমুখে গিরীনকে আড়ালে ডাকিয় কত না পরামর্শ । অথচ এই লোকটিরই অভিভাবকতায় একদিন তাহাকে থিয়েটার দেখিতে পৰ্য্যন্ত যাইতে দেয় নাই । তখনও একবার ভাবিবার চেষ্টা করিল, হয়ত সে তাহদের গোপন সম্বন্ধের কথা স্মরণ করিয়াই লজ্জায় ওরূপ ব্যবহার করিয়াছে,-কিন্তু তাই বা কি করিয়া সম্ভব ? তাহা হইলে, এত কাণ্ড ঘটিয়াছে, অথচ একটি কথাও কি সে এতদিনের মধ্যে কোন কৌশলে তাহাকে জিজ্ঞাসা করিবার চেষ্টা করিত না ? r