পাতা:পরিণীতা - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরিণীত Neto মুখে ভুবনেশ্বরী মধ্যে মধ্যে সংবাদ পাইতেন, গুরুচরণের মৃত্যুসংবাদও তিনি পাইয়াছিলেন । я তাহার পর এ-বাড়ীতে গুরুতর দুর্ঘটনা ঘটিল। নবীন রায় হঠাৎ মাবা গেলেন। ভুবনেশ্বরী শোকে-দুঃখে পাগলের মত হইয়া, বড় বধুর হাতে সংসার সঁপিয়া দিয়া কাশী চলিয়া গেলেন। বলিয়া গেলেন, আগামী বৎসর শেখরের বিবাহের সমস্ত ঠিক হইয়া গেলে, তিনি আসিয়া বিবাহ দিয়া যাইবেন । বিবাহের সম্বন্ধ নবীন রায় নিজেই স্থির করিয়াছিলেন, এবং পূর্বেই হইয়া যাইত, শুধু তঁহার মৃত্যু হওয়াতেই এক বৎসর স্থগিত ছিল । কন্যাপক্ষের আর বিলম্ব করা চলে না, তাই তাহারা কাল আসিয়া আশীৰ্ব্বাদ করিয়া গিয়াছিল । এই মাসেই বিবাহ । আজ শেখর জননীকে আনিতে যাইবার উদ্যোগ করিতেছিল। আলমারী হইতে জিনিষপত্র নামাইয়া তোরঙ্গ সাজাইতে গিয়া, অনেকদিন পরে তাহার ললিতার কথা মনে পড়িল-সব সে-ই করিত। তিন বৎসরের অধিক হইল তাহারা চলিয়া গিয়াছে, ইহার মধ্যে তাহাদের কোন সংবাদই সে জানে না, জানিধার চেষ্টাও করে নাই, বোধ করি ইচ্ছাও ছিল না। ললিতার উপরে ক্রমশঃ তাহার একটা ঘূণার ভােব আসিয়ছিল । কিন্তু, আজি সহসা ইচ্ছা করিল, যদি কোনমতে একটি খবর পাওয়া যায়-কে কেমন আছে । অবশ্য ভাল থাকিবারই কথা, কারণ, গিরীনের সঙ্গতি আছে, তাহা সে জানিত, তথাপি শুনিতে ইচ্ছা করে, কবে বিবাহ হইয়াছে, তাহার কাছে কেমন আছে-এই সব । ও-বাড়ীর ভাড়াটিয়ারাও আর নাই, মাস দুই হইল বাড়ী খালি করিয়া চলিয়া গিয়াছে। শেখর একবার ভাবিল, চারুর ব্যাপকে গিয়া জিজ্ঞাসা করিবে, কারণ, তাহারা গিরীনের সংবাদ নিশ্চয়ই রাখেন ।