পাতা:পল্লী-সমাজ.djvu/১১৪

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
পল্লী-সমাজ
১১২


প্রতিদিন কমে আস্‌চে, এবং মুসলমানেরা সংখ্যায় বেড়ে উঠ্‌চে। তবুত হিন্দুর হুঁস হয় না!” বিশ্বেশ্বরী হাসিয়া বলিলেন,—“তোর এত কথা শুনে এখনো ত আমার হুঁস হ’চ্চে না রমেশ! যারা তোদের মানুষ গুণে বেড়ায়, তারা যদি গুণে বল্‌তে পারে, এতগুলো ছোটজাত শুদ্ধমাত্র ছোট থাক্‌বার ভয়েই জাত দিয়েচে, তা হ’লে হয়ত আমার হুঁস হ’তেও পারে। হিন্দু যে কমে আস্‌চে, সে কথা মানি;—কিন্তু, তাঁর অন্য কারণ আছে। সেটাও সমাজের ত্রুটি নিশ্চয়; কিন্তু, ছোটজাতের জাত দেওয়াদেওয়ি তার কারণ নয়। শুধু ছোট ব’লে কোন হিন্দুই কোন দিন জাত দেয় না।”

 রমেশ সন্দিগ্ধকণ্ঠে কহিল,—“কিন্তু, পণ্ডিতেরা তাহা ত অনুমান করেন জ্যাঠাইমা!” জ্যাঠাইমা বলিলেন,—“অনুমানের বিরুদ্ধে ত তর্ক চলে না বাবা! কেউ যদি এমন খবর দিতে পারেন, অমুক গাঁয়ের এতগুলো ছোটজাত এই জন্যেই এ বৎসর জাত দিয়েচে, তা হ’লেও না হয় পণ্ডিতদের কথায় কাণ দিতে পারি। কিন্তু, আমি নিশ্চয় জানি, এ সংবাদ কেউ দিতে পার্‌বে না।° রমেশ তথাপি তর্ক করিয়া কহিল—“কিন্তু, যারা ছোটজাত, তারা যে অন্যায় বড়জাতকে হিংসা ক’রে চল্‌বে, এতো আমার কাছে ঠিক কথা ব’লেই মনে হয় জ্যাঠাইমা!” রমেশের তীব্র উত্তেজিত কথায় বিশ্বেশ্বরী আবার হাসিয়া উঠিলেন। বলিলেন,—“ঠিক কথা নয়, বাবা, একটুও ঠিক কথা নয়। এ তোদের সহর নয়।