পাতা:পল্লী-সমাজ.djvu/১৩৭

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১৩৫
পল্লী-সমাজ


খাওয়ানো সমাধা হইয়া গিয়াছিল—বেশী লোক আর ছিল না। পাড়ার মুরুব্বিরা তখন যাই-যাই করিতেছিলেন; এবং ধর্ম্মদাস হরিহর রায়কে আরও একটুখানি বসিতে পীড়াপীড়ি করিতেছিলেন। গোবিন্দ গাঙুলি একটুখানি সরিয়া বসিয়া, কে একজন চাষার ছেলের সহিত নিরিবিলি আলাপে রত ছিলেন। এম্‌নি সময়ে রমেশ দুঃস্বপ্নের মত একেবারে প্রাঙ্গণের বুকের মাঝ্‌খানে আসিয়া দাঁড়াইল। তাহাকে দেখিবামাত্র ইহাদের মুখও যেমন এক মুহূর্ত্তে মসীবর্ণ হইয়া গেল, শত্রুপক্ষীয় এই দুইটা লোককে এই বাটীতেই এমনভাবে যোগ দিতে দেখিয়া রমেশের মুখও উজ্জ্বল হইয়া উঠিল না। কেহই তাহাকে অভ্যর্থনা করিয়া বসাইতে অগ্রসর হইল না—এমন কি, একটা কথা পর্য্যন্তও কেহ কহিল না। ভৈরব নিজে সেখানে ছিল না। খানিক পরে সে বাটীর ভিতর হইতে কি একটা কাজে—‘বলি গোবিন্দ দা’—বলিয়া বাহির হইয়াই উঠানের মাঝ্‌খানে যেন ভূত দেখিতে পাইল, এবং পরক্ষণেই ছুটিয়া বাটীর ভিতরে ঢুকিয়া পড়িল। রমেশ শুষ্কমুখে একাকী যখন বাহির হইয়া আসিল, তখন প্রচণ্ড বিস্ময়ে তাহার মন অসাড় হইয়াছিল। পিছনে ডাক শুনিল,—“বাবা, রমেশ!” ফিরিয়া দেখিল, দীনু হন্‌হন্‌ করিয়া আসিতেছে। কাছে আসিয়া কহিল,—“চল বাবা, বাড়ী চল।” রমেশ একটুখানি হাসিবার চেষ্টা করিল মাত্র। চলিতে চলিতে দীনু বলিতে লাগিল,—“তুমি ওর যে উপকার করেচ বাবা, সে ওর বাপ-