পাতা:পল্লী-সমাজ.djvu/১৫৬

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
পল্লী-সমাজ
১৫৪


কথা কহিল না। যে কাজের জন্য আসিয়াছিল, তাহা শেষ করিয়া নিঃশব্দে চলিয়া গেল। দেড়মাস হইল, রমেশ অবৈধ প্রবেশ করিয়া, ভৈরবকে ছুরি মারার অপরাধে, জেল খাটিতেছে!—মকদ্দমায় বাদীর পক্ষে বিশেষ পরিশ্রম করিতে হয় নাই,—নূতন ম্যাজিষ্ট্রেট সাহেব কি করিয়া পূর্ব্বাহ্ণেই জ্ঞাত হইয়াছিলেন, এ প্রকার অপরাধ আসামীর পক্ষে খুবই সম্ভব এবং স্বাভাবিক। এমন কি, সে ডাকাতি প্রভৃতির সহিত সংশ্লিষ্ট কি না, সে বিষয়েও তাঁহার যথেষ্ট সংশয় আছে। থানার কেতাব হইতেও তিনি বিশেষ সাহায্য পাইয়াছেন। তাহাতে লেখা আছে, ঠিক এই ধরনের অপরাধ সে পূর্ব্বেও করিয়াছে, এবং আরও অনেক প্রকার সন্দেহজনক ব্যাপার তাহার নামের সহিত জড়িত আছে। ভবিষ্যতে পুলিস যেন তাহার প্রতি বিশেষ দৃষ্টি রাখে, তিনি এ মন্তব্য প্রকাশ করিতেও ছাড়েন নাই। বেশী সাক্ষ্য-প্রমাণের প্রয়োজন হয় নাই, তবে রমাকে সাক্ষ্য দিতে হইয়াছিল। সে কহিয়াছিল, “রমেশ বাড়ী ঢুকিয়া আচার্য্য মহাশয়কে মারিতে আসিয়াছিল, তাহা সে জানে। কিন্তু ছুরি মারিয়াছিল কি না, জানে না, হাতে তাহার ছুরি ছিল কি না, তাহাও তাহার স্মরণ হয় না।” কিন্তু এই কি সত্য? জেলার বিচারালয়ে হলফ্‌ করিয়া রমা এই সত্য বলিয়া আসিল; কিন্তু যে বিচারালয়ে হলফ্‌ করার প্রথা নাই, সেখানে সে কি জবাব দিবে! তাহার অপেক্ষা কে অধিক নিঃসংশয়ে জানিত, রমেশ ছুরিও মারে নাই, হাতে তাহার