পাতা:পল্লী-সমাজ.djvu/২০

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
পল্লী-সমাজ
১৮


উঠিল—“তবে রে শালা!”—ধর্ম্মদাস তাহার বাঁশের লাঠি উঁচাইয়া ধরিয়া হুঙ্কার দিয়াই প্রচণ্ডভাবে কাসিয়া ফেলিল। রমেশ শশব্যস্তে উভয়ের মাঝ্‌খানে আসিয়া পড়িয়া স্তম্ভিত হইয়া গেল। ধর্ম্মদাস লাঠি নামাইয়া কাসিতে কাসিতে বসিয়া পড়িয়া বলিল, “ও-শালার সম্পর্কে আমি বড়-ভাই হই কি না, তাই শালার আক্কেল দেখ—"

 “ওঃ, শালা আমার বড় ভাই!” বলিয়া গোবিন্দ গাঙ্গুলীও ছাতি গুটাইয়া বসিয়া পড়িল।

 সহরের ময়রারা ভিয়ান ছাড়িয়া চাহিয়া রহিল। চতুর্দ্দিকে যাহারা কাজকর্ম্মে নিযুক্ত ছিল, চেঁচামিচি শুনিয়া তাহারা তামাসা দেখিবার জন্য সুমুখে ছুটিয়া আসিল; ছেলেমেয়েরা খেলা ফেলিয়া হাঁ করিয়া মজা দেখিতে লাগিল; এবং এই সমস্ত লোকের দৃষ্টির সম্মুখে রমেশ লজ্জায়, বিস্ময়ে, হতবুদ্ধির মত স্তব্ধ হইয়া দাঁড়াইয়া রহিল। তাহার মুখ দিয়া একটাও কথা বাহিল হইল না। কি এ? উভয়েই প্রাচীন, ভদ্রলোক—ব্রাহ্মণ-সন্তান! এত সামান্য কারণে এমন ইতরের মত গালিগালাজ করিতে পারে? বারান্দায় বসিয়া ভৈরব কাপড়ের থাক্ দিতে দিতে সমস্তই দেখিতেছিল, শুনিতেছিল। এখন আসিয়া রমেশকে উদ্দেশ করিয়া কহিল, “প্রায় শ’-চারেক কাপড় ত হ’ল, আরও চাই কি?” রমেশের মুখ দিয়া হঠাৎ কথাই বাহির হইল না। ভৈরব রমেশের অভিভূতভাব লক্ষ্য করিয়া হাসিল। মৃদু অনুযোগের স্বরে কহিল, “ছিঃ