পাতা:পল্লী-সমাজ.djvu/৫২

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
পল্লী-সমাজ
৫০


দীনু যেমন ভঙ্গী করিয়া জিভ বাহির করিয়া দেখাইল, তাহাতে রমেশ হাসিয়া ফেলিল। দীনু কিন্তু হাসিতে যোগ দিল না—কহিল, “হাসির কথা নয় বাবাজী, অতি সত্য কথা। আমি নিজেও প্রাচীন হয়েচি—কিন্ত—তুমি যে অন্ধকারে অনেকদূর এগিয়ে এলে, বাবাজী।” “তা’ হোক্‌ ভট্‌চায্যিমশাই, আপনি বলুন।” “কি আর বল্‌ব বাবা, পাড়াগাঁ মাত্রই এই রকম। এই গোবিন্দ গাঙুলী—এ ব্যাটার বাপের কথা মুখে আন্‌লে প্রায়শ্চিত্ত কর্‌তে হয়। ক্ষান্তবাম্‌নি ত আর মিথ্যে বলেনি—কিন্তু সবাই ওকে ভয় করে! জাল করতে, মিথ্যেসাক্ষী, মিথ্যে মোকদ্দমা সাজাতে ওর জুড়ি নেই। বেণীবাবু হাতধরা—কাজেই কেউ একটি কথা কইতে সাহস করে না, বরঞ্চ ওই-ই পাঁচজনের জাত-মেরে বেড়াচ্চে!” রমেশ অনেকক্ষণ পর্য্যন্ত আর কোন প্রশ্ন না করিয়া, চুপ করিয়া সঙ্গে সঙ্গে চলিতে লাগিল। রাগে তাহার সর্ব্বাঙ্গ জ্বালা করিতেছিল। দীনু নিজেই বলিতে লাগিল—“এই আমার কথা তুমি দেখে নিয়ো বাবা, ক্ষেন্তিবাম্‌নি সহজে নিস্তার পাবে না। গোবিন্দ গাঙুলী, পরাণ হালদার দু-দুটো ভীমরুলের চাকে খোঁচা দেওয়া কি সহজ কথা! কিন্তু যাই বল বাবা, মাগীর সাহস আছে। আর সাহস থাক্‌বে নাই বা কেন? মুড়ী বেচে খায়, সব ঘরে যাতায়াত করে, সকলের সব কথা টের পায়। ওকে ঘাঁটালে কেলেঙ্কারির সীমা-পরিসীমা থাক্‌বে না, তা ব’লে দিচ্চি। অনাচার আর কোন্ ঘরে নেই বল? বেণীবাবুকেও—” রমেশ